Vande Bharat Express

শৌচাগারে জলে টান, খুলছে না দুই কামরার মাঝের দরজা, পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন বন্দে ভারতে

রবিবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে ট্রেন হাওড়া থেকে রওনা হওয়ার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে বন্দে ভারত ১১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে অপেক্ষা করছিল। ছুটির দিন হলেও যাত্রীদের উৎসাহে ঘাটতি ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:০১
Share:

পরিষেবায় পূর্ণ মান পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকেই গেল বন্দে ভারতের। ছবি: পিটিআই।

প্রথম শ্রেণির ট্রেনের তকমা তার গায়ে, অথচ বঙ্গের বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ওয়াইফাইয়ের সুবিধা মেলেনি বলে অভিযোগ। শৌচাগারে জলের টান, দুই কামরার মধ্যবর্তী দরজা ঠিকঠাক না-খোলা, চা-প্রাতরাশ সব যাত্রীর কাছে যথাসময়ে পৌঁছে দিতে না-পারার মতো পরিষেবাগত অভিযোগ অনেক। সব মিলিয়ে রাজনীতির ভাষা অনুসরণে বলতে গেলে বঙ্গে বন্দে ভারতের প্রথম বাণিজ্যিক যাত্রা নিয়ে যাত্রিসাধারণের ‘প্রতিক্রিয়া মিশ্র’। যাত্রা শুরু থেকে বিভিন্ন স্টেশনে পৌঁছনো পর্যন্ত ট্রেনটি যে-সময়ানুবর্তিতা দেখিয়েছে, তাতে কমবেশি সকলে তুষ্ট হলেও অনেকের কাছে চা-প্রাতরাশ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সময়ের সেই অনুগমন দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। পরিষেবায় পূর্ণ মান পাওয়া নিয়ে সংশয় তাই থেকেই গেল বন্দে ভারতের।

Advertisement

রবিবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে ট্রেন হাওড়া থেকে রওনা হওয়ার অন্তত দু’ঘণ্টা আগে বন্দে ভারত ১১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে অপেক্ষা করছিল। ছুটির দিন হলেও যাত্রীদের উৎসাহে ঘাটতি ছিল না। পেশায় বেসরকারি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার মুকুলেশ দেবনাথ দীর্ঘ কাল রেলের যন্ত্রাংশ উৎপাদন সংস্থায় কাজ করেছেন। এখনও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের নকশা তৈরি করেন। তাঁর মতে, ওই ট্রেনের প্রযুক্তি এবং সফর-স্বাচ্ছন্দ্যের মান প্রশ্নাতীত। এ দিন ভোরে ঘন কুয়াশা থাকা সত্ত্বেও বন্দে ভারত নির্ধারিত সময় সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে বোলপুর (শান্তিনিকেতন) পৌঁছয়। মালদহে পৌঁছে যায় প্রায় ২৫ মিনিট আগে। সেখানে ওই সময়টুকু অপেক্ষা করে ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনেও পৌঁছয় প্রায় নির্ধারিত সময়েই। দু’মিনিট দেরি হলেও যাত্রীদের অনেকে সেটাকে ‘লেট’ বা বিলম্ব বলতে রাজি নন। রাতে ফিরতি পথেও নির্দিষ্ট সময়ের ১৩ মিনিট আগে, ১০টা ২২ মিনিটে হাওড়ায় পৌঁছে যায় বন্দে ভারত।

কিন্তু অনেক যাত্রীই প্রশ্ন তুলেছেন ওই ট্রেনের কামরার ভিতরকার বিভিন্ন সেন্সর নিয়ন্ত্রিত স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে। অভিযোগ, দু’টি কামরার মাঝখানের কাচের দরজা অনেক ক্ষেত্রেই ঠিকমতো খুলছিল না। এগ্‌জ়িকিউটিভ শ্রেণির কয়েকটি শৌচালয়ে জল ফুরিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন অনেকে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেন্সর নিয়ন্ত্রিত সোপ ডিসপেন্সার ঠিকমতো কাজ না-করার অভিযোগ শোনা গিয়েছে। মুকুলেশের অভিযোগ, ‘‘চেয়ারকারে তিনটি আসনের মধ্যে যিনি মাঝখানে বসবেন, তাঁর জলের বোতল রাখার আলাদা ব্যবস্থা নেই। অথচ তার দু’পাশের আসনে ওই সুবিধা আছে। তিনি শতাব্দী এক্সপ্রেসের ধাঁচে শৌচালয়ের বাইরে একটি বেসিন রাখা উচিত বলে জানান। ওই ট্রেনের অন্য যাত্রী, গুগলের আঞ্চলিক গাইড শৌনক দাস বলেন, ‘‘ট্রেনে ওয়াইফাই সুবিধা নেই। তা চলছিল না। কেটারিং সংস্থার দেওয়া খাবার শতাব্দী এক্সপ্রেসের থেকে খুব কিছু আলাদা নয়।’’

Advertisement

পুরো ভর্তি ট্রেনে কেটারিং কর্মীদের পরিষেবায় ঘাটতি ছিল বলে অভিযোগ। অনেকেরই অনুযোগ, অল্প কর্মী দিয়ে পুরো ট্রেন সামলাতে গিয়ে বহু যাত্রীর কাছে চা, কফি, প্রাতরাশ পৌঁছে দিতে দেরি হয়েছে। এ দিন হাওড়া থেকে এনজেপি বা নিউ জলপাইগুড়ির পথে বন্দে ভারতের প্যান্ট্রিতে জল গরম করার মেশিনে গোলমাল দেওয়ায় চায়ের জল গরম হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। কিছু যাত্রীর বক্তব্য, সেই কারণেই অনেককে চা ও প্রাতরাশ দিতে দেরি হয়। তবে দুপুরের খাবার ঠিক সময়েই মিলেছে বলে জানান তাঁরা। হাওড়া স্টেশনে বন্দে ভারতে উটকো লোকজনের উঠে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে এ দিন। ওই ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে যাত্রীদের অনেকে উদ্বিগ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন