অবরোধ বাউড়িয়া স্টেশনে।
বন্ধ হিন্দমোটর কারখানা-সহ জেলার সমস্ত কলকারখানা খোলার দাবিতে সংযুক্ত সংগ্রাম কমিটির ডাকে মঙ্গলবার সকালে হাওড়া শাখায় রেল অবরোধ করা হয়। মেইন শাখায় ওই অবরোধের জেরে সপ্তাহের কাজের দিনে এদিন সকালে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন শাখায় বিভিন্ন স্টেশনে দূরপাল্লা-সহ লোকাল ট্রেনগুলি দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে অবশ্য রেল ও জেলা পুলিশ অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়। বেলা বাড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দক্ষিণ পূর্ব রেলের বাউড়িয়া স্টেশনেও প্রায় আধঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। আটকে যায় বেশ কিছু ট্রেন। নাকাল হতে হয় অফিস যাত্রীদের। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম মোটরগাড়ি কারখানা বন্ধ হয়ে রয়েছে। তার উপর গত কয়েক মাসে জেলায় গঙ্গার পাড় ধরে পর পর বেশ কয়েকটি চটকল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একদিকে নতুন কর্মসংস্থান না হওয়ার পাশাপাশি কাজ হারানো শ্রমিকদের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতেই রেল রোকোর ডাক দেয় সংযুক্ত সংগ্রাম কমিটি। হিন্দমোটর কারখানার এসএসকে ইউ, আইএনটিইউসি-সহ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন এদিনের অবরোধে সামিল হয়।
রেল রোকো। হিন্দমোটর স্টেশনে।
সকাল ৯টা থেকে হাওড়া আপ ও ডাউন লাইনে হিন্দমোটর কারখানার শ্রমিকেরা বসে পড়েন। অবরোধ চলে প্রায় আধ ঘন্টা। কিন্তু সকালের ব্যাস্ত সময়ে ওই অবরোধের জেরে হাওড়ামুখী ডাউন ট্রেনগুলি দাঁড়িয়ে পড়ে। অফিসযাত্রীরা নাকাল হন। অবরোধকারীদের অন্যতম নেতা অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। প্রতিশ্রুতি ছিল ৫৬ হাজার কলকারখানা খোলা হবে। একটা কারাখানাও খোলেনি। উল্টে রাজ্যে কারখানা বন্ধের শোভাযাত্রা চলছে। এখন সংগঠিত প্রতিবাদ ছাড়া আর বাঁচার রাস্তা কোথায়?’’
বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কারখানা খুলতে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু কিছুই হল না। তিনবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হল। ফল মিলল কোথায়? এখন সব চুপচাপ। শ্রমিকেরা যাবে কোথায়? যদিও শাসকদলের এক শ্রমিক নেতা জানান, হিন্দমোটর একটি বেসরকারি সংস্থা। কারখানা খুলতে সে ক্ষেত্রে সরকারের সরাসরি কিছুই করার নেই। তবে চেষ্টা চলছে। আর জুটমিল বন্ধের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের নীতিই দায়ী।
—নিজস্ব চিত্র।