আবেদন করার পরে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসে দিতে হচ্ছে আঙুলের ছাপ। তুলতে হচ্ছে ছবি। পরীক্ষা করাতে হচ্ছে নানান প্রমাণপত্র। অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পরে তবেই হাতে আসছে পাসপোর্ট।
আবেদনকারীদের এই কষ্ট, এই ঝক্কিঝামেলা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে চাইছে বিদেশ মন্ত্রক। পাসপোর্টের জন্য আর যাতে অনেক দূরে যেতে না-হয়, বাসিন্দারা যাতে নিজের নিজের এলাকাতেই পাসপোর্ট তৈরির প্রাথমিক কাজকর্ম সেরে ফেলার সুযোগ পান, সেই জন্য এ বার পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র (পিএসকে) খোলা হচ্ছে ডাকঘরেই।
সাত মাস আগে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটের ডাকঘর দিয়ে। পরে কৃষ্ণনগর, আসানসোল, রায়গঞ্জের ডাকঘরেও খোলা হয়েছে পিএসকে। রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার (আরপিও) বিভূতি কুমার জানান, এ বার পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র খোলা হবে ব্যারাকপুর, বর্ধমান, মালদহ আর দার্জিলিঙের প্রধান ডাকঘরেও।
বিভিন্ন জেলার ডাকঘরে পিএসকে খোলার আগে এ রাজ্যের বাসিন্দাদের পাসপোর্টের প্রাথমিক প্রক্রিয়ার জন্য কলকাতা বা বহরমপুরের পিএসকে-তে যেতে হচ্ছিল। কিছু দিনের মধ্যে কলকাতার মতো শিলিগুড়িতেও একটি বড় পিএসকে খোলা হবে বলে জানান বিভূতি। তার পরেও আবেদনকারীদের কষ্ট কমাতে ডাকঘরগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বড় পিএসকে-তে যে-সব কাজ হয়, ডাকঘরের পিএসকে-তেও তা-ই করা হচ্ছে। যিনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন, তাঁকে কাছাকাছি পিএসকে-তে নির্দিষ্ট দিনে সব প্রমাণপত্র-সহ যেতে বলা হয়। সেখানে আঙুলের ছাপ ও ছবি নিয়ে, প্রমাণপত্র খতিয়ে দেখে তা পুলিশের কাছে যাচাই করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এখন যে-দু’টি বড় পিএসকে রয়েছে, তার এলাকাও ভাগ করা আছে। দার্জিলিঙের বাসিন্দাদের আসতে হচ্ছে বহরমপুরে। বর্ধমানের বাসিন্দাদের কলকাতায়। বিভূতি বলেন, ‘‘দার্জিলিং ও বর্ধমানের ডাকঘরে পিএসকে চালু হয়ে গেলে এতটা আর আসতে হবে না।’’
আরপিও জানান, প্রাথমিক ভাবে ওই ডাকঘরগুলিতে দিনে পাসপোর্টের ৫০টি আবেদন যাচাই করার মতো পরিকাঠামো রাখা হবে। সংখ্যাটা বাড়ানো হবে চাহিদা বুঝে। উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, কৃষ্ণনগরের ডাকঘরে প্রথমে রোজ ৫০টি আবেদন যাচাইয়ের পরিকাঠামো থাকলেও তা বাড়িয়ে ১১০টি করা হচ্ছে।
উত্তর কলকাতার বাসিন্দাদের জন্য বিডন স্ট্রিটের ডাকঘরে যে-পিএসকে রয়েছে, সেখানে অবশ্য দিনে গড়ে মাত্র ১০-১৫ জন আবেদনকারী আসছেন। বিভূতি বলেন, ‘‘প্রথমত, উত্তর কলকাতার বাসিন্দাদের কাছে বিডন স্ট্রিটের থেকে রুবি মোড়ের প্রধান পিএসকে খুব বেশি দূরে নয়। তা ছাড়া প্রধান পিএসকে-তে পাসপোর্ট পেতে যত দিন লাগছে, ডাকঘরে গেলে তার চেয়ে হয়তো দু’দিন বেশিই লাগছে।’’