রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
তাঁদের সঙ্গে ভোটার তালিকার কোনও সম্পর্ক নেই। অথচ তাঁদের কাছেই ক্ষোভ-অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেকে। তাঁরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরের কর্মী-আধিকারিক।
ভোটার তালিকার বিষয়টি দেখে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতর। সোমবার রাজ্যের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে মুহুর্মুহু বেজে গিয়েছে ফোন। কমিশনের কর্মী-অফিসারেরা প্রশ্নবাণে জর্জরিত।
তালিকায় কেন নাম নেই, মূলত এই প্রশ্নই ছুড়ছেন প্রশ্নকর্তারা। চিৎকার করে এক জন বললেন, ‘‘যা যা নথি চাওয়া হয়েছিল, সবই দিয়েছি। অথচ আমার নাম নেই কেন?’’ অন্য এক জনের প্রশ্ন, ‘‘নথি জমা দেওয়ার পরে বলা হয়েছিল, আমি ভোট দিতে পারব! কিন্তু এখন নাম নেই? কেন লোকজনকে এ-সব বলেন!’’ কমিশনের যে-সব আধিকারিক-কর্মী ফোন ধরছেন, তাঁরা জানান, ভোটার তালিকার সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রশ্নকর্তা পাল্টা বলেন, ‘‘আপনারা না-জানলে কারা জানবে? ভোট তো আপনারা নেন।’’ কমিশনের তরফে প্রশ্নকর্তাদের জানানো হয়, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে সিইও-র অফিস! পাল্টা প্রশ্ন ধেয়ে আসে, সিইও-র অফিস মানে কী?
কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা নম্বরেই বেজেছে ফোন। নাম তোলা নিয়ে অসন্তোষের ফোন সিইও-র দফতরে এ দিন আসেনি বললেই চলে। কারও জিজ্ঞাসা, ‘‘আমি ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় ছিলাম না। এখন কি নাম তুলতে পারব!’’ কারও প্রশ্ন, ‘‘নাম তোলার কাজ চলাকালীন আমি একটি নথি জোগাড় করতে পারিনি। এখন কি নাম তোলা যাবে? এই ধরনের প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট জবাবই দিয়েছেন সিইও-র দফতরের কর্মীরা। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভোটার তালিকায় কী ভাবে নাম তুলবেন, সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা তো আমাদের দায়িত্ব।’’ চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য আবেদন করেছিলেন ২৩,৮৫,৭২৬ জন। তার মধ্যে ২০,৬৭,৩০৩ জনের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে।
আমজনতা কেন সিইও-র দফতরের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে মিলিয়ে ফেলছে, সেই প্রশ্ন উঠছে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতর এবং কমিশনকে অনেকেই গুলিয়ে ফেলেন। এই বিষয়ে অধিকাংশ মানুষেরই সুস্পষ্ট ধারণা নেই। সেই জন্যই ওই সব ফোন সিইও-র দফতরের বদলে কমিশনে পৌঁছেছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষ এত কিছু সব সময় বুঝতে পারেন না। তাই ভুল করে ফোন করেছেন।’’