নালিশ: ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ। ইটাহারে। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ইটাহারে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে গিয়ে বন্যা দুর্গতদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।
এক সপ্তাহ ধরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলেও দুর্গতরা কেউ ত্রিপল আবার কেউ পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলে গৌতমবাবুর সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বন্যায় ভিটেমাটি হারানো অনেক দুর্গত আবার হাতজোড় করে মন্ত্রীর কাছে ত্রিপল ও খাবারের ব্যবস্থা করারও অনুরোধ করেন। সোমবার গৌতমবাবু স্পিডবোর্ডে চেপে ইটাহার ব্লকের সুরুণ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বগুন, রাজগ্রাম, হঠাতপাড়া, মনিহার ও ইন্দ্রান এলাকায় ঘুরে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। মহানন্দা ও সুঁই নদীর বাঁধ সহ বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় নেমে তিনি দুর্গতদের সঙ্গে কথাও বলেন। গৌতমবাবু নিজে হাতেও দুর্গতদের মধ্যে সরকারি ত্রিপল ও চিড়ে বিলি করেন।
এ দিন মণিহার ও হঠাতপাড়া এলাকার বাসিন্দা মইদুর শেখ, নুরজান বেওয়া ইদুল শেখ মন্ত্রী গৌতমবাবুকে বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ ধরে বাঁধের উপরে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছি। ঘরছাড়া ৪০০ পরিবারের মধ্যে ২০০টি পরিবারই ত্রিপল পায়নি। দুবেলা নিয়মিত চিড়ে, গুড় ও খিচুড়িও পাচ্ছি না।’’
গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সরকারি ত্রাণের কোনও অভাব নেই। কিন্তু স্পিডবোড ও নৌকার অভাবে বন্যা কবলিত সমস্ত জায়গায় সমানভাবে নিয়মিত ত্রিপল ও খাবার পাঠাতে দেরি হচ্ছে।’’ তিনি আরও দুদিন জেলায় থেকে ইটাহারের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেবেন বলে জানান। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করে দুর্গতদের ক্ষতিপূরণ ও ইটাহারের পুনর্গঠনের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা।
এ দিন মন্ত্রীকে সামনে পেয়ে ঘিরে ধরেন দুর্গতরা। ইন্দ্রান এলাকার বাসিন্দা অমূল্য দাস, ক্ষিতিশচন্দ্র সাহা, গৃহবধূ হেমন সাহা ও রেবতি দাস সহ শতাধিক দুর্গত গৌতমবাবুর সামনে গিয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘এক সপ্তাহ ধরে এলাকার ৫০০টি পরিবারের বাড়িতে জল কোমর সমান জল। সরকারি ত্রিপল আসতে শুরু করলেও এলাকার কিছু মানুষ সেগুলি লুঠ করে নিচ্ছেন। তাই অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। চিড়ে ও গুড় কিছুই পাচ্ছিনা।’’
তিনি মেনে নেন, দুর্গতদের ক্ষোভ স্বাভাবিক। তিনি জানান, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শিলিগুড়ি থেকে আরও চিড়ে, গুড় ও ত্রিপল পাঠানো হচ্ছে। সমস্ত দুর্গত যাতে সমানভাবে ত্রাণের সমস্ত সামগ্রী পান, তা প্রশাসনকে দেখতে বলা হয়েছে।