বাড়তে পারে রোগের প্রকোপ

টানা বৃষ্টিতে পাড়াময় থইথই জল। পিপুলকে কিছুতেই বাড়িতে রাখা যাচ্ছে না। নাছোড়বান্দা জেদ ছেলের। বন্ধুরা মিলে বৃষ্টি ভিজবে, জমা জলে লাফাবে, কাগজের নৌকো ভাসাবে। এখানেই লাগাম টানতে বলছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৫ ০৩:১৫
Share:

টানা বৃষ্টিতে পাড়াময় থইথই জল। পিপুলকে কিছুতেই বাড়িতে রাখা যাচ্ছে না। নাছোড়বান্দা জেদ ছেলের। বন্ধুরা মিলে বৃষ্টি ভিজবে, জমা জলে লাফাবে, কাগজের নৌকো ভাসাবে।

Advertisement

এখানেই লাগাম টানতে বলছেন চিকিৎসকরা। সুস্থ থাকার তাগিদে জমা জল এড়িয়ে যেতে বলছেন তাঁরা। কারণ এর থেকে ছোটদের তো বটেই, এমনকী প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর, গলাব্যথা, সাইনুসাইটিস, ফ্যারিনজাইটিস, লেপ্টোস্পাইরোসিস, ত্বকের সংক্রমণ, হেপাটাইটিস এ, হেপাটাইটিস ই, ডায়রিয়া, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ হতে পারে।

চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার এবং বিভিন্ন হাসপাতালে অধিকাংশ শিশুরোগীই এখন ভর্তি হচ্ছে ভাইরাল ফিভার, রক্ত আমাশা, ডায়রিয়া, টাইফয়েডের সমস্যা নিয়ে। ভাইরাল ফিভার হলে বাচ্চাদের ১০৩-১০৪ জ্বর উঠে যাচ্ছে। এক বার ঘাম

Advertisement

দিয়ে জ্বর ছাড়ার পরেও আবার জ্বর ঘুরে আসছে। সঙ্গে গায়ে ব্যথা, দুর্বলতা, বমি ভাব। অনেক সময় পেটখারাপ হচ্ছে।

টানা বর্ষণ ও বন্যা পরিস্থিতির জেরে গত মাসে মুম্বইয়ে ‘লেপ্টোস্পাইরোসিস’ রোগে অনেক শিশু মারা গিয়েছিল। জমা জলে পশুদের মূত্র মিশে গিয়ে এই রোগের ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। সেই জলে হাঁটাচলা করলে মানুষের দেহেও সেই ব্যাকটেরিয়া ঢুকে কিডনি, যকৃৎ, চোখের মতো বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতায় তুলনায় কম হলেও এই রোগ হয়। প্রবীণ শিশুচিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের মতে, ‘‘এই সময়টা খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চারা যাতে বৃষ্টির জমা জলে কম বের হয়, পায়ে জল কম লাগায়, বাইরের খাবার ও জল একেবারে না খায়।’’

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সমরজিৎ নস্কর, অরুণাংশু তালুকদারদের কথাতেও বর্ষার সময়ে ছাতা, বর্ষাতি, গামবুটের প্রতিরোধ নিয়ে রাস্তায় বেরোনো ভাল। অফিসে অতিরিক্ত জামাকাপড় রেখে দিতে হবে। জলে ভিজলে বা জমা জলে হাঁটতে হলে দ্রুত বাড়ি ফিরে ভাল করে গরম জলে হাত-মুখ সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। জমা জল তাড়াতাড়ি সাফ করতে হবে যাতে সেখানে মশা না জন্মায়।

বর্ষা মানেই নাক-কান-গলার অসুখের বাড়াবাড়ি। ইএনটি বিশেষজ্ঞ দেবাশিস মুখোপাধ্যায়ের মতে, সাইনুসাইটিস, টনসিলাইটিস, ফ্যারিনজাইটিসের মতো রোগের আক্রমণ এড়াতে এই সময়ে বেশি ক্ষণ ভিজে অবস্থায় থাকা চলবে না, নিয়ম করে উষ্ণ জলে নুন দিয়ে গার্গেল করতে হবে।

বর্ষায় বাড়ে ত্বকের রোগও। ত্বক বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় ঘোষের মতে, যাঁদের পায়ে আগে থেকেই এগজিমা বা সোরিওসিস আছে তাঁদের নোংরা জমা জল থেকে মারাত্মক ধরনের সেলুলাইটিস হতে পারে। এ ছাড়াও টাইট জিনস বা টপ থেকে এই সময়ে ফাঙ্গাস ইনফেকশন বাড়ে। ফলে যতটা সম্ভব ঢিলেঢালা, সুতির পোশাক পরতে হবে। জল থেকে ফিরে ঈষদুষ্ণ নুন-জলে হাত-পা ধুয়ে, শুকিয়ে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগাতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন