shibpur botanical garden

গাছের ‘হাতে খুন’ ১৭৪টি গাছ! শিবপুর বটানিক গার্ডেনে উদ্বেগ

শিকড়ে পেঁচিয়ে শিবপুর বটানিক গার্ডেনের অনেক দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির গাছকে মেরে ফেলেছে বট, পাকুড় এবং অশ্বত্থেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ১৮:১৩
Share:

শিকড়ের প্যাঁচে এ ভাবেই মারা পড়ছে বি-গার্ডেনের বহু দুষ্প্রাপ্য গাছ— নিজস্ব চিত্র।

গাছের হাতে ‘খুন’ গাছ! আস্ত একটা গাছকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেছে ‘রাক্ষুসে’ গাছ! এ কোনও গল্প নয়। বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে শিবপুর বটানিক গার্ডেনে।

Advertisement

প্রায় ৫০ বছর আগে বটানিক গার্ডেনে বসানো একটি রুদ্রাক্ষ গাছের ‘অন্তর্ধান রহস্য’ উদ্ঘাটনে নেমে জানা যায়, সেটি চলে গিয়েছে একটি বট গাছের গ্রাসে। ওই বট গাছের ভিতরে পাওয়া যায় রুদ্রাক্ষের কাণ্ডের অংশ। শিবপুরের এই উদ্ভিদ উদ্যানে কোনও গাছ পোঁতা হলে তার রেকর্ড রাখা হয়। সেই রেকর্ড ঘাঁটতে গিয়ে দেখা যায়, এ রকম ১৭৪টি গাছ একেবারে ‘উধাও’। আসলে শিকড়ে পেঁচিয়ে তাদের মেরে ফেলেছে বট, পাকুড় এবং অশ্বত্থ গাছ। এই সব গাছের গ্রাসে এই মুহূর্তে মৃত্যুর মুখে হাওড়ার এই প্রাচীন উদ্যানের অনেক দুষ্প্রাপ্য গাছ। শিবপুর বটানিক গার্ডেনের বিজ্ঞানী বসন্ত সিংহের কথায়, ‘‘এটা বাস্তব। শুধু ভারতীয় উদ্ভিদ উদ্যান নয়, বাইরে অন্য জায়গাতেও এই ঘটনা ঘটছে।’’

কিন্তু একটি গাছ আর একটি গাছকে কী ভাবে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলতে পারে? বসন্ত সিংহ জানান, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে মোরাসি প্রজাতির কিছু গাছ (মূলত বট)। তিনি বলেন, ‘‘এই গাছের ফল খেয়ে পাখিরা মুখে করে কিংবা বিষ্ঠার মাধ্যমে ফেলে কোনও গাছের উপর। সেই ফলের বীজ থেকে চারাগাছ জন্মায়। তার পর সেই চারা বাড়তে থাকে। তার শিকড় এবং ঝুরি পোষক গাছটিকে আস্তে আস্তে ঘিরে ফেলে। ঠিক মতো আলো-বাতাস না পেয়ে এবং উপরের গাছটির প্রচণ্ড চাপে ধীরে ধীরে মৃত্যু হয় আসল গাছটির।’’ তিনি আরও জানান, শিবপুর বি-গার্ডেনের পৃথিবীখ্যাত বট গাছ (গ্রেট ব্যানিয়ন ট্রি)-এরও বিস্তার হয়েছে একটি খেজুর গাছকে মেরে ফেলে!

Advertisement

আরও পড়ুন: শ্রীনগরের কাছেই জঙ্গি হামলা, গুলির লড়াইয়ে নিহত দুই সেনা জওয়ান

বটানিক গার্ডেনের কর্মী কার্তিক পাল বহু বছর এখানে কাজ করছেন। প্রথমে চোখে না পড়লেও পরে বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে জানতে পারেন এই অদ্ভূত ঘটনা। নিজে পরে ঘটনাগুলো মিলিয়েও দেখেন বলে জানিয়েছেন কার্তিক।

কিন্তু এমন ঘটনা ঠেকানো কী সম্ভব? উদ্যানের যুগ্ম অধিকর্তা কণাদ দাসের কথায়, ‘‘শিবপুর বটানিক গার্ডেন আসলে একটি উদ্যান কোনও সংরক্ষিত বনাঞ্চল নয়। অরণ্যে যে কোনও গাছ যত্রতত্র জন্মাতে পারে, কিন্তু উদ্যানে নয়। উদ্যানে সমস্ত গাছ দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু এই উদ্যানে বহু অবাঞ্ছিত গাছকে বড় হতে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে এমন বিপত্তি ঘটেছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, এর পর যে সমস্ত গাছ বসানো ও সংরক্ষণ করা হবে, সেই সমস্ত গাছ ছাড়া কোনও অবাঞ্ছিত গাছ উদ্যানে রাখা হবে না। সংরক্ষিত গাছের উপর কোনও গাছ জন্মালে সেই অবাঞ্ছিত গাছটি কেটে ফেলা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: বিভাজন থেকেই আসে ঐক্য, বাইডেনের ‘থ্যাঙ্কসগিভিং’ বার্তা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন