সাধু-স্নান: গঙ্গাসাগরে ডুবের পরে। শনিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
ইতিউতি ঘুরে মেলার বন্দোবস্ত দেখছিলেন বিহারভূম থেকে আসা নারায়ণকুমার যাদব। তার পরে যেন আনমনেই বলে ফেললেন, ‘‘হামারা উধার নীতীশজি কি তরহাই ইধার মমতাজি হ্যায়। নকশাহি বদল দিয়া গঙ্গাসাগর কা!’’
চল্লিশের দোরগোড়ায় পৌঁছনো নারায়ণ দশ বছর ধরে গঙ্গাসাগরে আসছেন। কিন্তু এ বারের আয়োজনে তিনি মুগ্ধ। বলেও ফেললেন সে কথা, ‘‘আগের সঙ্গে এ বারে অনেক তফাত। শৌচালয় থেকে থাকার ব্যবস্থা— প্রশংসা করতেই হয়।’’
শুক্রবার থেকেই পুরোদমে গঙ্গাসাগরে মেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। রবিবার ভোররাত থেকে শুরু হবে পুণ্যস্নান। কিন্তু ভিড় জমতে শুরু করেছে দু’দিন আগে থেকেই। সামাল দিতে তৈরি জেলা প্রশাসন। এ বার ভক্তদের থাকার ব্যবস্থা যেমন বাড়ানো হয়েছে, তেমনই বেড়েছে শৌচালয়ের সংখ্যা। জেলাশাসক রত্নাকর রাও জানান, লট-৮ এবং কচুবেড়িয়াতেও শিবিরের আয়তন বাড়ানো হয়েছে। গত বছর শিবির হয়েছিল পাঁচটি করে। এ বার কম করে ১৩টি। কোথাও ১৫টিও হয়েছে। মন্দিরের কাছাকাছি থাকার জন্য অস্থায়ী শিবিরও হয়েছে।
বিহারের ভাগলপুর মণ্ডলের বাসিন্দা নারায়ণ যাদব জানান, দশ বছর আগে এখানে শৌচালয় খুঁজে বেড়াতে হতো। বেশির ভাগ পুণ্যার্থীকে খোলা আকাশের নীচেই কাজ সারতে হতো। তাই ইচ্ছা থাকলেও পরিবারকে আনা যেত না। কিন্তু চার বছরে পরিস্থিতি বদলেছে। সেই কারণে গত দু’বছর ধরে গোটা পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে আসছেন তিনি।
মধ্যপ্রদেশ থেকে আসা লক্ষ্মীবাই ঠাকুরও জানালেন, তাঁর স্বামী পাঁচ বছর আগে সাগরে এসে দেখেছিলেন ব্যবস্থা খুব সুবিধার নয়। তাই সঙ্গে আনেননি তাঁকে। গত বছর স্বামীর অভিজ্ঞতা শুনে এ বার এসেছেন।
জেলাশাসক জানান, মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে বাস, ভেসেল-সহ সমস্ত পরিষেবা আগের থেকে ভাল করা হয়েছে। মোট ৩০টি ছোট ভেসেল, চারটি বড়় ভেসেল চালানো হচ্ছে। বয়স্কদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তবুও সকলের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা হবে। ঠান্ডায় কাবু হয়ে চার জন পুণ্যার্থী এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন।