Srijato Bandopadhyay

ছাইরঙের গ্রাম থেকে অন্ধকার লেখাগুচ্ছ, কবিতা পায়, জন্মায়, নির্মাণ হয় না: শ্রীজাত

দর্শক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘কবিতা নির্মিত হয়, নাকি কবিতা জন্মায়।’ শ্রীজাতর সোজাসাপ্টা জবাব, তাঁর ক্ষেত্রে কবিতা জন্মায়, নির্মিত হয় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২১ ১৬:৪২
Share:

ফাইল চিত্র

কবি শ্রীজাত নানা সময়ে রাজনৈতিক-সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরব হয়েছেন। তেমনই বার বার আলোচনায় উঠে এসেছে তাঁর ‘ছাই রঙের গ্রাম’ ও ‘অন্ধকার লেখাগুচ্ছ’-এর মতো কবিতার বইগুলি। ২০১১ সালে প্রকাশিত হয় ছাই রঙের গ্রাম আর ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় অন্ধকার লেখাগুচ্ছ। আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকারে এই দু’টি বইয়ের যাত্রা নিয়েই প্রশ্ন করেছিলেন এক দর্শক।

প্রশ্ন শুনে শ্রীজাত বললেন, ‘‘খুবই কঠিন ছিল এই যাত্রা। এই ধরনের লেখা কেউ লিখতে চায় না। লেখাগুলো খুবই যন্ত্রণা, খুবই পীড়া এবং খুবই অক্ষমতার বোধ থেকে উঠে আসে। আসলে আমরা তো বাড়িতে বসে থাকি, তেমন কিছু করতে পারি না। একটা জমায়েত বা মোমবাতি মিছিলেও তেমন কিছু হয় না। যে ঘটনা ঘটার তা দিনের পর ঘটে চলেছে। সেই অক্ষমতা থেকে অন্ধকার লেখাগুচ্ছ বা ছাইরঙের গ্রাম-এর মতো লেখার জন্ম হয়।’’

অন্ধকার লেখাগুচ্ছের একটি কবিতায় শ্রীজাত লিখেছিলেন, ‘তুমি যদি বারংবার কোপ মারতে পারো,/ ছিন্ন কাঁধে ফের মাথা জন্মাবে আমারও।’বইয়ে বার বার উঠে এসেছিল ধর্মান্ধতার প্রসঙ্গ। শ্রীজাত বললেন, ‘‘সেই যন্ত্রণার দিনগুলো খুবই করুণ। আমি চাই না যাতে আমায় অন্ধকার লেখাগুচ্ছ বা ছাইরঙের গ্রাম লিখতে হয়। যাতে পৃথিবী আর সেই জায়গায় গিয়ে না দাঁড়ায়।’’

Advertisement

কবিতা নিয়েই এসেছিল অন্য একটি প্রশ্ন। দর্শক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘কবিতা নির্মিত হয়, নাকি কবিতা জন্মায়।’ শ্রীজাতর সোজাসাপ্টা জবাব, তাঁর ক্ষেত্রে কবিতা জন্মায়, নির্মিত হয় না। বললেন, ‘‘আমার মনে হয় উপন্যাস নির্মিত হয়, প্রবন্ধ নির্মিত হয়, নিবন্ধ নির্মিত হয়, কবিতার পক্ষে নির্মিত হওয়া সম্ভব নয়। কবিতা যদি নির্মিত হতেই পারত, তা হলে কবিতার স্রোত সবসময় একই রকম থাকত। রোজ সকালে উঠে পাঁচটা কবিতা লিখতে পারতাম। এক একটা সময় যায় টানা আট-ন’মাস গিয়েছে, তেমন কিছু লিখি না। আবার একটা সময় হয়, যখন এক মাসে প্রত্যেকদিন চার-পাঁচটা করে কবিতা আমার কাছে আসে। এর উপরে আমার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, আমি জানিও না এ কোত্থেকে আসে। ফলে কবিতা নির্মিত হয় বলে আমি বিশ্বাস করি না।’’

তা হলে কবিতা কী ভাবে আসে, নাকি কবিতা পায়? অনেকটা প্রেম পাওয়ার মতো! শ্রীজাত বললেন, ‘‘সত্যিই, কবিতা যখন পায়, তখন তাঁকে আটকে রাখা মুশকিল হয়। এমনও ঘটনা ঘটেছে যে আমি গাড়ি চাপা পড়তে পড়তে বেঁচেছি। পার্ক সার্কাসে এক বার, এক বার যাদবপুর এইটবি বাসস্ট্যান্ডের কাছে। এক বার গাড়ির চালক ঠিক সময়ে ব্রেক চেপেছিলেন বলে বেঁচেছি, আর এক বার এক ভদ্রলোক আমাকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এটা আমার জীবনে বহুবার হয়েছে। আমি বিমানও মিস করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন