বিস্তর বিতর্ক বাধিয়ে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষকদের বেতন থেকে বাড়িভাড়া বাবদ প্রাপ্য অর্থ কাটার বিষয়টি আপাতত স্থগিত থাকবে বলে জানাল উচ্চশিক্ষা দফতর। শাসক দলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসুর দাবি, সোমবার তাঁকে এ কথা জানিয়েছেন দফতরের এক কর্তা। ওই নেত্রীর কথায়, “বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলাম। দফতরের কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছিলাম। মন্ত্রী আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।”
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, এ ভাবে বেতন কাটা সমর্থন করেন না তিনি। সোমবার মন্ত্রী বলেন, “কেন এই পদ্ধতিতে বেতন কাটা হচ্ছিল, তার লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছি উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তাদের কাছে।”
২০১২ সালের অর্থ দফতরের একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, কোনও সরকারি কর্মচারীর স্বামী বা স্ত্রী বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করলেও দু’জন মিলিয়ে বাড়িভাড়া বাবদ মাসে ছ’হাজার টাকার বেশি পাবেন না। এই নির্দেশিকার ভিত্তিতে আচমকা গত কয়েক মাস বেশ কিছু সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন থেকে বাড়িভাড়া বাবদ অর্থ কাটা শুরু হয়েছিল। এ নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। এমনকী মামলাও দায়ের করা হয়। কেন এ ভাবে বেতন কাটা হচ্ছে, হলফনামা দিয়ে তা জানাতে বলেছে হাইকোর্ট।
এই পরিস্থিতিতে কিছুটা চাপে পড়েই সরকার পিছু হটতে বাধ্য হল বলে মনে করছেন অনেকে। কৃষ্ণকলিদেবী বলেন, “ইতিমধ্যেই যে সব শিক্ষকের বেতন থেকে বাড়িভাড়া বাবদ অর্থ কাটা হয়েছে, তাঁদের সেই টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর।” দফতরের কোনও আধিকারিক অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলেননি। টেলিফোনে ও এসএমএস-এ যোগাযোগ করা হলেও উত্তর দেননি রাজ্যের শিক্ষা অধিকর্তা (ডিপিআই) নিমাইচন্দ্র সাহা।
শুধু কলেজেই নয়, স্কুলশিক্ষকদের বেতন থেকেও একই ভাবে অর্থ কাটা হচ্ছে আরও আগে থেকেই। হাইকোর্টে মামলা চলছে স্কুলশিক্ষকদের বেতন কাটা নিয়েও। কলেজ শিক্ষকদের ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা থমকে যাওয়ায় স্কুলশিক্ষকেরাও আশায় বুক বাঁধছেন। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এ ব্যাপারেও তিনি খোঁজখবর করবেন।