আহতেরা কই,খুঁজছে পুলিশ

মঙ্গলবার সকালে কালিম্পঙে রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ বলেন, ‘‘কিছু লোক পাহাড়ে গোলমাল করতে চাইছে। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

পরিদর্শন: কালিম্পঙের পথে ডিজি। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

সিংলার জঙ্গলে শুক্রবার ভোরের সংঘর্ষে সময় বিমল গুরুঙ্গের অনুগতদের কয়েকজনও আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাঁরা জঙ্গলেই লুকিয়ে রয়েছেন। সিকিম থেকে ডাক্তারদের নিয়ে এসে তাঁদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে বলে পুলিশের অনুমান। তবে
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আহতদের সিকিমেরই কোনও গ্রামে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেখানেই তাঁদের গোপনে চিকিৎসা চলছে। পুলিশ তার খোঁজ করছে।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে কালিম্পঙে রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ বলেন, ‘‘কিছু লোক পাহাড়ে গোলমাল করতে চাইছে। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর চলছে। কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে। এ দিনই, সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিককে খুনের অভিযোগে বিমল গুরুঙ্গ, প্রকাশ গুরুঙ্গ, প্রবীন সুব্বা, দীপেন মালে, অমৃত ইয়নজন-সহ ২০ জনের নামে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

সিংলার যে জঙ্গলে সে দিন অভিযানে অমিতাভর মৃত্যু হয়, সেখানে ছোট রঙ্গিত লাগোয়া এলাকায় রক্তের দাগ দেখেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, সিংলার জঙ্গল ক্যাম্পে বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ জন সশস্ত্র জিএলপি কর্মী ছিলেন। যাদের মধ্যে অন্তত ১০ জন দূর থেকে গুলি করতে দক্ষ। নদীর ধারে অমিতাভ গুলিবিদ্ধ হতেই দলটি জঙ্গলের আরও ভিতরে ঢুকে পড়ে। তারপরে কিছু অস্ত্র ফেলে রেখেই তারা নদী পার হয়ে সিকিমের দিকেই পালিয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদি।

Advertisement

রঙ্গিত পার হলেই সিকিমের কারমাটার, নয়াবাজার ফরেস্ট ব্লক এবং চুমবং এলাকা। আরেক পাশে জোরথাং। যেখান থেকে মেল্লি হয়ে সড়কপথে দার্জিলিং আসা যায়। স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের কয়েকজন সদস্য জানান, ১৭ জুন ও ১৮ জুলাই দার্জিলিঙে এবং ১৮ জুলাই মিরিকে গুলি চলে। তিন জনের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানতে পারে, মোট ১৮ জন জখম, গুলিবিদ্ধ সোজা নামচি ও জোরথাং হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হন। পরে কয়েকজনকে মণিপাল রেফারাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের নাম ঠিকানা পুলিশ পেয়েছিল। পরে কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশিও হয়।

কিন্তু এ বার ওই সমস্ত হাসপাতালে কেউ যাননি। তার পরিবর্তে কোনও সমর্থকের বাড়ি বা গোপন ডেরায় রেখে আহতদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে বলে পুলিশের অনুমান। তদন্তকারীরা জানান, ১৩ অক্টোবর রাতে গুরুঙ্গের অডিও বার্তা প্রকাশ হতেই সেই সূত্র ধরে গোপন ঘাঁটিতে পৌঁছয় পুলিশ। ঘটনার পর থেকে গুরুঙ্গ আর কারও সঙ্গে সরাসরি টেলিফোনে কথা বলছেন না। তবে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’ কল করে সিকিম এবং দার্জিলিঙে যোগাযোগ করছেন বলে খবর। নানা সূত্রের খবরের ভিত্তিতে সিকিমের কয়েকজন চিকিৎসকের উপরেও নজর রেখেছে পুলিশ। তাঁদের গতিবিধি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে দার্জিলিং জেলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলেই জানিয়েছেন ডিজি। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। মানুষও বন্‌ধ চাইছেন না।’’ তবে রাজ্যের তরফে পাহাড়ে আরও সশস্ত্র বাহিনী পাঠানো হবে বলেও ডিজি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন