বেআইনি অস্ত্র। নিজস্ব চিত্র।
সামনে লাড্ডু কারখানা। আর তার আড়ালেই চলছিল অস্ত্র কারখানা। জাল নোটের কারবারী ধরতে গিয়ে গোয়েন্দারা হদিশ পেলেন বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রর বড়সড় কারখানার।
কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের দাবি, সোমবার সুকু সেখ নামে মালদার কালিয়াচকের এক জাল নোটের কারবারীকে তাঁরা পাকড়াও করেন। আর তার সঙ্গেই ধরা পড়ে আমজাদ রায়ান এবং আবদুল্লা নামে মুঙ্গেরের দুই বাসিন্দা। ধৃতদের কাছ থেকে এক লাখ টাকার জাল নোটের সঙ্গে উদ্ধার হয় ৪০টি পিস্তল। পাকড়াও হওয়া আবদুল্লাকে জেরা করেই এর পর হদিশ মেলে উত্তর শহরতলীর কাঁকিনাড়ার কাছে অস্ত্র কারখানার।
সোমবার বিকেলে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই লাড্ডু কারখানায় হানা দেয় কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশিতে উদ্ধার হয় অস্ত্র ও হাতিয়ার বানানোর সর়ঞ্জাম। গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ছ’জনকে।
কাঁকিনাড়ার কারখানায়। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা পুলিশের এসটিএফ জানিয়েছে বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র বানানোর কারিগরদের নিয়ে আসা হয়েছিল। তারা কালীচরণ সাউ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল তিন মাস আগে। মাসে আট হাজার টাকা ভাড়া পেত কালীচরণ। আগে ওই বাড়িতেই কালীচরণের লাড্ডু কারখানা ছিল। দেড় বছর আগে আগুনে কারখানা পুড়ে যায়।
লেদ মেশিন। নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাইন এবং সেভেন মিলিমিটার বোরের পিস্তলের কাঠামো বানানো হত ওই কারখানায়। লেদ মেশিন, মিলিং মেশিন, ড্রিলাং মেশিন সহ, পিস্তল বানানোর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং স্প্রিং, ট্রিগারের মত পিস্তলের যন্ত্রাংশ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গিয়েছে ওই কারখানায়। উদ্ধার হয়েছে আরও ২০ টি পিস্তলের কাঠামো।
পিস্তলের কাঠামো। নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ধৃত মহম্মদ সাবির রায়েন, মহম্মদ সৌদ আলম, মহম্মদ শাহনওয়াজ, মহম্মদ ফয়সল, মহম্মদ রাজি ও মহম্মদ চাঁদ — সকলেই মূলত অস্ত্র কারিগর এবং বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। কার মাধ্যমে এই বাড়ি ভাড়া নেওয়া হল, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
এর আগে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে দক্ষিণ শহরতলীর রবীন্দ্রনগর-মহেশতলা এবং খাস কলকাতার বুকে তিলজলাতে একই রকম অস্ত্র কারখানার হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। সেই কারবারীদের সঙ্গে এই কারখানার কোনও যোগ আছে কী না সেটাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।