সারদা-তদন্তে কেন তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে ডাকা হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে সিবিআইয়ের অধিকর্তা অলোককুমার বর্মাকে চিঠি দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। তাঁর অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রাজনৈতিক নেতাদের খুশি করতে তাঁকে এ ভাবে তলব করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের দাবি, রাজীবের আগে সারদা মামলায় রাজ্যের একাধিক আইপিএস অফিসারকে নোটিস পাঠিয়েই ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রাজীব কুমারের চেয়েও সিনিয়র অফিসার রয়েছেন। এমনই কয়েক জন দিল্লিতে গিয়ে সিবিআইয়ের সিনিয়র অফিসারদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বক্তব্যও জানিয়ে এসেছেন। তাই রাজীবের ক্ষেত্রে কোনও ভুল হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউকে ডেকে পাঠাতে হলে নোটিস দেওয়াই দস্তুর।
পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ যাতে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত কোনও মামলায় সিবিআইয়ের কাজে হস্তক্ষেপ না করে, তার জন্য সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়েছে এই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, সেই সময়ে অন্য সব নথিপত্রের সঙ্গে রাজীব কুমারের লেখা এই চিঠিও শীর্ষ আদালতকে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার যুক্তি, ২০১৩ সালের এপ্রিলে রাজীব কুমারের নেতৃত্বে সারদা নিয়ে প্রথম তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশ। সেই তদন্ত চলাকালীন বেশ কিছু ‘প্রভাবশালী’-কে বাঁচানোর জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নথিপত্র নষ্ট করা হয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ অভিযোগ করে। সেই অভিযোগ কতটা ঠিক, তা জানতে গত অগস্টে নিয়ম মেনে রাজীবকে ডাকা হয়। সেই ডাকে প্রথম বার পুজোর কাজে ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সাড়া দেননি রাজীব। পরে ২৩ নভেম্বর ফের নোটিস পেয়ে পাল্টা ওই চিঠি লেখেন রাজীব। তাতে নাম না করে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের প্রসঙ্গ তুলেছেন তিনি। রাজীব চিঠিতে জানিয়েছেন, বছরখানেক আগে এক রাজনৈতিক নেতা তাঁর সম্পর্কে জনসভায় দাঁড়িয়ে মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর মনে হচ্ছে, সেই নেতাকে খুশি করতেই সিবিআই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে।
রাজীবের অভিযোগ, তাঁর তদন্তকারী দলে থাকা দুই অফিসারকে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করেছে সিবিআই। অথচ তাঁদের কাছে তদন্তের বিষয়ে তেমন কিছু জানতেই চাওয়া হয়নি। এর পরে অন্য কোনও সিনিয়র অফিসারকে না ডেকে তাঁকেই সরাসরি ডেকে পাঠানো হয়েছে! তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই নোটিসের পাল্টা হিসেবে রোজ ভ্যালি নিয়ে কলকাতা পুলিশের করা একটি ‘সামান্য’ ভাঙচুরের মামলায় প্রথমে সিবিআইয়ের ডিএসপি, পরে যুগ্ম অধিকর্তার কাছে ২০টি প্রশ্নের জবাব চান কলকাতা পুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টর। রাজীব কুমার ফোন ধরেননি। মোবাইলে পাঠানো এসএমএস-এরও উত্তর দেননি।