বেলজিয়াম চান ‘দাজু’, হেঁয়ালির জটে পুলিশ

‘দাজু’ কে? নেপালিতে অগ্রজদের সম্মান সূচক যে সম্বোধন করা হয়, তার বাংলা করলে দাঁড়ায় দাদা। তাই গোয়েন্দাদের অনুমান, যাঁর কথা বলা হচ্ছে তিনি নেপালি।

Advertisement

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:১১
Share:

উত্তপ্ত: মোর্চা-পুলিশ সংঘর্ষের পরে। শুক্রবার দার্জিলিঙের চকবাজারে। —নিজস্ব চিত্র।

হেঁয়ালির জট ছাড়াতে ব্যস্ত এখন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

Advertisement

১৮ অগস্ট দার্জিলিঙের চকবাজারে থানার সামনে একটি বিস্ফোরণ হয়। তদন্তে নেমে তার পরপর পুলিশ কয়েকজন সন্দেহভাজনের কথোপকথনের একটি রেকর্ড হাতে পেয়েছে। তাতে এক জন আর এক জনকে বলছেন, ‘যে বিস্ফোরণ হয়েছে তাতে ‘দাজু’ খুশি নন। তিনি বেলজিয়াম আনার নির্দেশ দিয়েছেন।’

‘দাজু’ কে? নেপালিতে অগ্রজদের সম্মান সূচক যে সম্বোধন করা হয়, তার বাংলা করলে দাঁড়ায় দাদা। তাই গোয়েন্দাদের অনুমান, যাঁর কথা বলা হচ্ছে তিনি নেপালি। গোয়েন্দাদের কয়েকজনই জানাচ্ছেন, চকবাজারের ওই বিস্ফোরণ মোর্চার কট্টরপন্থী অংশই ঘটিয়েছে বলে ধারণা। বিস্ফোরণের তীব্রতায় যে ‘দাজু’ খুশি নন, তিনি তাই মোর্চারই কোনও বড় নেতা হওয়াই স্বাভাবিক। সন্দেহের তির বিমল গুরুঙ্গের দিকেই। সে কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ইউএপিএ প্রয়োগ করা হয়েছে। ১৯ অগস্ট কালিম্পঙের বিস্ফোরণের পরেই গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ করে পুলিশ। সে দিন বিকেলেই নবান্ন থেকে এক শীর্ষ কর্তা সেটা ঘোষণাও করে দেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাংলা, ইংরেজি, হিন্দিতে ‘বাংলা’ই চাইছে রাজ্য

সে কারণেই, ‘বেলজিয়াম’-ও বিস্ফোরক হওয়াটাই স্বাভাবিক বলে মনে করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, তদন্ত সম্পূর্ণ হয়নি বলেই মন্তব্য করা সম্ভব হবে না। তবে পাহাড়ে বিস্ফোরণের আড়ালে কারা, তা নিয়ে প্রচুর কথোপকথনের নথি যে তদন্তকারীদের হাতে পৌঁছে গিয়েছে, সেটা ওই কর্তা একান্তে মেনেছেন। সেই কথোপকথনের রেকর্ড শুনেই এই হেঁয়ালির জট ছাড়ানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ হলেও তা আদালতে কতটা ধোপে টিকবে, তা নিয়ে মোর্চার আইনজীবী সেলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ, অতীতে ভাঙড়ে নকশালপন্থীদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আদালত খারিজ করে দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে স্রেফ কথাবার্তার রেকর্ডের সূত্রে পাহাড়ের সব থেকে শক্তিশালী দলের শীর্ষ নেতাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতায় যুক্ত বলে প্রমাণ করাটাও সময় সাপেক্ষ বলে মনে করেন মোর্চার অনেকে।

উপরন্তু, গুরুঙ্গ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতে নিরপেক্ষ কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবি জানালে মামলা নতুন মোড় নিতে পারে বলেও মোর্চার মত। তাঁরা জানান, যে কথাবার্তার সুবাদে মোর্চা সভাপতিতে মামলায় জড়ানো হয়েছে, সেখানে ‘দাজু’ মানে যে গুরুঙ্গ, তা কে প্রমাণ করবে? এক নেতা বলেন, ‘‘ফোনে কে, কাকে দাজু বলেছেন, আর তদন্তকারীরা কাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চেষ্টা করছেন, সেটা আদালতেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement