প্রতীকী ছবি।
আদিবাসী গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলেই শেষ পর্যন্ত চার্জশিটে উল্লেখ করল পুলিশ। শনিবার রাতে ওই মহিলাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয়। বৃহস্পতিবার সেই ঘটনায় আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। চার্জশিটে ৩৭৬ডি, ৩২৬ ও ৩০৭ তিনটি ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ধৃতদের।
ঘটনাটি ধর্ষণ নাকি গণধর্ষণ, তার ব্যাখ্যা নিয়ে মতানৈক্য ছিল পুলিশের মধ্যেও। রবিবার ওই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করার পরই জেলা পুলিশ জানায়, ওই বধূকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। তবে রাজ্য পুলিশের এডিজি অনুজ শর্মা তার পরপরই বিবৃতি দেন, ওই মহিলাকে তাঁর প্রতিবেশী এক যুবকই ব্যক্তিগত বিদ্বেষ থেকে ধর্ষণ করেছে। তাই শুধু তার বিরুদ্ধেই ধর্ষণের মামলা দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশও তারপরে বক্তব্য বদলে দেয়। তবে জানায়, সব দিক খতিয়ে দেখে পরে অন্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধেও ধর্ষণের মামলা দেওয়া হতে পারে। এরপরে বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি আদালতে জেলা পুলিশ চার্জশিটে ঘটনাটিকে গণধর্ষণই বলেছে।
জেলা পুলিশের বক্তব্য, মূল অভিযুক্ত যুবক ওই বধূকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছে। কিন্তু নির্ভয়া কাণ্ডের পরে গণধর্ষণ মামলায় যে নতুন আইন হয়েছে, তাতে ঘটনাস্থলে কেউ উপস্থিত থাকলে, তাঁর বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগই আনার কথা। তাই প্রশ্ন উঠেছিল, ধূপগুড়িতে ধৃত অন্য যুবকের বিরুদ্ধেও পুলিশ ধর্ষণের মামলা দায়ের করছে না কেন? চার্জশিটে অবশ্য পুলিশ শেষ পর্যন্ত তাই করেছে। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখে এবং অভিযুক্তদের বয়ান ও অভিযোগকারী মহিলার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতেই চার্জশিট তৈরি হয়েছে। যাদের নামে এর আগে অভিযোগ করা হয়েছিল, সেই দু’জনের নামই চার্জশিটে রয়েছে।’’
তবে মূল অভিযুক্তের সঙ্গে যাকে ধরা হয়েছে, তিনি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না বলেই গ্রামবাসীদের কয়েকজনের দাবি। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলা ঘটনার দিন থেকে শুধু ওই দু’জনের নামই বলছেন। পুলিশকে বয়ান দেওয়ার সময়ও তিনি ওই দু’জনের নামই বলেছিলেন। গোপন জবানবন্দি দেওয়ার সময়ও তিনি নির্দিষ্ট করে ওই দুই যুবকের নাম বলেন। সেই মতোই চার্জশিট তৈরি হয়েছে।
নির্যাতিতা মহিলাকে বুধবার রাতেও এক ইউনিট রক্ত দিতে হয়েছিল। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন তাঁর শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে।