সুপারি কিলারের নাম উজ্জ্বলের মুখে

কাটোয়ার আবাসনপাড়ার উজ্জ্বলের ও তাঁর মা ছবিরানি ঘোষকে শনিবার গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। রবিবার কাটোয়া আদালত উজ্জ্বলকে সাত দিন পুলিশি হেফাজত ও তাঁর মাকে সাত দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। পুলিশের দাবি, জেরায় উজ্জ্বল দু’জন ‘সুপারি কিলার’-এর কথা জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

ফাইল চিত্র।

কখনও জানাচ্ছেন, খুন করা হয়েছে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে।। আবার কখনও দাবি করছেন, মারা হয়েছে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে। সুপারি দিয়ে স্ত্রীকে খুন করায় অভিযুক্ত কাটোয়ার শিক্ষক উজ্জ্বলভাস্কর ঘোষ জেরায় এ ভাবেই বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

কাটোয়ার আবাসনপাড়ার উজ্জ্বলের ও তাঁর মা ছবিরানি ঘোষকে শনিবার গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। রবিবার কাটোয়া আদালত উজ্জ্বলকে সাত দিন পুলিশি হেফাজত ও তাঁর মাকে সাত দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। পুলিশের দাবি, জেরায় উজ্জ্বল দু’জন ‘সুপারি কিলার’-এর কথা জানান। কাটোয়ার জামাইপাড়ার ওই দু’জনের খোঁজ চলছে।

১৯ জুলাই কাটোয়ার একটি দিঘির ধারের ঝোপ থেকে উজ্জ্বলের স্ত্রী, বছর আঠাশের মহুয়া ঘোষের বস্তাবন্দিদেহ উদ্ধার হয়। তবে অ্যাসিডে বিকৃত মুখ তখন চেনা যায়নি। মহুয়াদেবীর নিখোঁজ থাকার কথা জানতে পেরে কয়েক জন পড়শি চেপে ধরেন দাঁইহাটের চরপাতাইহাট হাইস্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক উজ্জ্বলকে। তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পুলিশের দাবি, জেরায় উজ্জ্বল জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে বধূ নির্যাতনের মামলায় জেলে গিয়ে দুই ‘সুপারি কিলারে’র সঙ্গে আলাপ হওয়ার পরেই স্ত্রীকে খুনের ছক কষেছিলেন। ১৮ জুলাই রাতে বাড়িতে এসে মহুয়াকে খুন করে ওই দুষ্কৃতীরা। তা দেখে ফেলে উজ্জ্বল ও মহুয়ার সাড়ে ছ’বছরের ছেলে।

Advertisement

পুলিশের দাবি, উজ্জ্বল জানিয়েছেন, ‘পরিস্থিতির চাপে’ বিয়ে করলেও মহুয়াদেবীকে তিনি পছন্দ করতেন না। নানা বিষয়ে সন্দেহও করতেন। মহুয়াদেবী প্রায়ই বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে বাপের বাড়িতে থাকতেন। তবে কী ভাবে স্ত্রীকে খুন করা হয়, সে ব্যাপারে নানা বয়ান দিচ্ছেন উজ্জ্বল। এ দিন আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি ছিলেন নির্বিকার। মাঝে-মধ্যে আপনমনে বিড়বিড় করতে দেখা যায় তাঁকে। পুলিশ জানায়, ধৃতকে জেরা করে খুনে ব্যবহৃত জিনিসের হদিস করা হবে।

উজ্জ্বল আদতে কেতুগ্রামের গোন্নাসেরান্দির স্কুলপাড়ার বাসিন্দা। প্রতিবেশীরা জানান, উজ্জ্বল এলাকায় বিশেষ মেলামেশা করতেন না। বছর সাতেক আগে কাটোয়ায় থাকতে শুরু করার পরে গ্রামে বিশেষ আসতেনও না। স্ত্রীকে মোটরবাইকে চাপিয়ে কয়েক বার গ্রামে আনলেও বাড়ি থেকে বিশেষ বেরোতে দিতেন না। কোনও অনুষ্ঠানে বা আত্মীয়ের বাড়িতে একাই যেতেন উজ্জ্বল। এক পড়়শি বলেন, ‘‘গ্রামের ছেলে এমন অপরাধ করেছে, শুনে লজ্জা হচ্ছে। ওর উপযুক্ত শাস্তি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন