মমতার জেলা সফরে স্কুলে ঠাঁই নয় পুলিশের

এক জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) জানান, এটা অবশ্যই ভাল সিদ্ধান্ত। কারণ স্কুল-কলেজের ঘর নেওয়ার ফলে জনমানসে খারাপ বার্তা যেত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৮ ০৫:৫৮
Share:

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী।

আমজনতার কাছে বিরূপ বার্তা যাচ্ছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরকালে পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীদের আর সংশ্লিষ্ট এলাকার স্কুল-কলেজে থাকার ব্যবস্থা করা হবে না।

Advertisement

নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের সময় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীদের বৈঠকের প্রধান কেন্দ্রে আনা হয়। তার আশেপাশে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শ্রেণিকক্ষে রাখা হয় তাঁদের। ফলে স্কুল-কলেজের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। সেই বিষয়ে অজস্র অভিযোগ এসেছে নবান্নে। তার ভিত্তিতেই স্বরাষ্ট্র দফতর সম্প্রতি সব জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরকালে আর কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার কাজে আনা পুলিশকর্মীদের রাখা যাবে না। তাঁদের থাকার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। বিকাশ ভবনের খবর, সম্প্রতি
ওই নির্দেশ সব জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

প্রশাসনের অন্দরের পর্যবেক্ষণ, সম্প্রতি রাজ্য সরকার বিভিন্ন খাতে খরচ কমাতে উদ্যোগী হয়েছে। ফলে একেবারে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যেই তাঁদের নজরে আসে, প্রশাসনিক বৈঠকের সময় নিরাপত্তার কাজে আসা পুলিশকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে স্কুল বা কলেজে। জেলা সফরের পরে ধাপে ধাপে স্কুল-কলেজ খালি করা হয়। আধিকারিকদের একাংশের যুক্তি, মুখ্যমন্ত্রী জনস্বার্থেই জেলা সফর করেন। কিন্তু সেই সফরকে ঘিরে যদি সব কিছু থমকে যায়, তা হলে সরকারি ভাবমূর্তির উপরে তার একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার না-করার রাস্তাই নিয়েছেন কর্তারা।

Advertisement

এক জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) জানান, এটা অবশ্যই ভাল সিদ্ধান্ত। কারণ স্কুল-কলেজের ঘর নেওয়ার ফলে জনমানসে খারাপ বার্তা যেত। স্কুলে পঠনপাঠন তো বন্ধ থাকতই, স্কুলগুলি অপরিচ্ছন্নও হয়ে যেত। সরকার যখন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে কড়া নজর দিচ্ছে, সেই সময়ে এটা কাম্য ছিল না। এই সিদ্ধান্তকে সকলেই স্বাগত জানাচ্ছে।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘এটা সরকারের বিলম্বিত বোধোদয়। মুখ্যমন্ত্রী ঘনঘন জেলা সফরে যাচ্ছেন বলে স্কুল বন্ধ রাখার বিষয়টি নজরে এসেছে। আমরা অনেক আগে থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছি। বিভিন্ন নির্বাচনেও স্কুলভবন নেওয়া হয়। ভোটের সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে পুলিশ শিবির করা না-হয়, সেটা ভেবে দেখার জন্য সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন