মাদক চক্রে খোঁজ চিনা রহস্যময়ীর

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০৫:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাদক পাচারে অভিযুক্ত পাঁচ চিনা নাগরিকের জেরা পর্বে উঠে এল এক চিনা মহিলার প্রসঙ্গ। বছর দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার কাজিসাহা এবং নওয়াদায় চারকোল কারখানা তৈরির সময় থেকে ওই মহিলার সেখানে যাতায়াত। তাঁর যোগাযোগের সূত্রেই মুর্শিদাবাদে চিনাদের অন্তত তিনটি ঘাঁটি তৈরি হয়েছিল বলে জেনেছে সিআইডি। কিন্তু ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই কাজিসাহার কারখানায় আগুন লাগার পর থেকে সেই চিনা মহিলা বেপাত্তা।

Advertisement

এক সিআইডি-কর্তা জানান, বেলডাঙা থানার কাজিসাহা ও কালীতলার মাঝখানে যে-চারকোল কারখানা গড়ে উঠেছিল, সেখানেই ঘাঁটি গেড়েছিলেন ওই চিনা মহিলা। তিনি ওখানে থাকাকালীন বিভিন্ন সময়ে অনেক চিনা নাগরিক তাঁর কাছে আসতেন। কয়েক দিন থেকে আবার চলে যেতেন। কিন্তু ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই আগুন লাগে সেই কারখানায়। তার পর থেকে সেই চিনা মহিলার খোঁজ নেই। চিনারা সেই কারখানা তখনই বেলডাঙা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় নওয়াদায়।

কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরে পুলিশ ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’ বা বিদেশি নাগরিক আইনে মামলা করেছিল, কিন্তু তদন্ত বিশেষ এগোয়নি। ৪০ কোটি টাকার অ্যামফেটামাইন বা ইয়াবা ট্যাবলেট আটকের পরে ফের সেই মহিলার খোঁজ শুরু হয়েছে। সিআইডি সূত্র জানাচ্ছে, মুর্শিদাবাদের কিছু স্থানীয় চাঁই চিনাদের সঙ্গে নানা ধরনের কাজকারবারে জড়িয়ে রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Advertisement

চিনের টেলিকম সংস্থার কর্মী ওয়াং শিয়াতং-সহ পাঁচ জনকে জেরা করে সিআইডি জানতে পেরেছে, তাঁরা যে মুর্শিদাবাদে যাতায়াত করতেন, বহরমপুরের কেউ তাতে সাহায্য করেছেন। সিআইডি-র দাবি, চিনারা গত দু’বছর ধরে চারকোল এবং চুলের কারখানা চালাচ্ছিলেন। সেই কারখানা গড়তে যাঁরা মদত দেন, তাঁদের কাছ থেকে আরও কিছু জানা যেতে পারে। সিআইডি জেনেছে, চিনারা যে বেলডাঙা এবং নওয়াদায় ঘাঁটি গেড়েছে, জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের সেটা জানা ছিল। পাটকাঠি পুড়িয়ে চারকোল রফতানির একটি বৈধ সংস্থারও হদিস পেয়েছে পুলিশ। নওয়াদার মধুপুরের মিনু শেখ এবং বেলডাঙার আনিসুর রহমান ও সাবির আলি নামে তিন জনের নাম পেয়েছে সিআইডি। ওই তিন জন চিনাদের কারখানা স্থাপনে সাহায্য করেছেন বলে সিআইডি সূত্রের খবর। স্থানীয় স্তরে ওঁদের রাজনৈতিক প্রভাব কতটা, তদন্তকারী সংস্থা তা জানার চেষ্টা করছে। শুধুই চারকোল কারখানা, নাকি তার পিছনে অন্য কারবারও চলত, সেটা জানাই এখন তদন্তকারীদের মূল কাজ।

সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘চারকোল কারখানার সঙ্গে ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরির সম্পর্ক কী, মুর্শিদাবাদের কোথায় কোথায় এই ধরনের কারখানা রয়েছে, তা সবিস্তার সন্ধান পেতে নিখোঁজ চিনা মহিলাকে গ্রেফতার করা জরুরি। তাঁর হদিস পাওয়ার চেষ্টা চলছে।’’

(চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন