প্রতিরোধ: বিজেপি কর্মীদের আটকানোর চেষ্টা। ইসলামপুরে। নিজস্ব চিত্র
ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গিয়ে চড়ল পারদ। বাধল তুমুল বচসা, হল ধস্তাধস্তি। সোমবার বিজেপির ধর্না-অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে উত্তর থেকে দক্ষিণ, রাজ্যের নানা প্রান্তেই সামনে এল এই দৃশ্য।
ভাটপাড়ার ‘সন্ত্রাসে’ পুলিশের ভূমিকা, রাজ্য জুড়ে পুলিশি জুলুম ও দলীয় কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর প্রতিবাদে এ দিন বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। তমলুকের অবস্থানে এসে বিজেপি-র রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকারের হুঁশিয়ারি, ‘‘যে সব পুলিশ অফিসার বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছেন, তৃণমূলের বি-টিম হয়ে কাজ করছেন, আমরা তাঁদের চিহ্নিত করে রাখছি। সরকারে এলে এই সব পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থান করতে গেলে দু’শো মিটার দূরে পুলিশ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আটকায়। বেলা দেড়টা নাগাদ ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা হলে ধস্তাধস্তি হয়। সেখানেই অবস্থান শুরু করে বিজেপি। পরে দু’টো নাগাদ প্রতিনিধি দল গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়ে আসে। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা হয়েছে আলিপুরদুয়ারে। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি হয় বিজেপি কর্মীদের। কোচবিহারে ব্যারিকেডের সামনে গিয়ে অবস্থানে বসেন বিজেপির কর্মীরা। তবে চড়া রোদে অবস্থান-বিক্ষোভ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
রবিবার জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে বিজেপির চার কর্মীর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ দিন সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই জেলা পুলিশ সুপারের সামনে অবস্থানে বসে বিজেপি। মহিলাদের ভিড় ছিল নজরে পড়ার মতো। চড়া রোদে কর্মীদের জন্য মুড়ি, ঘুগুনি, চিঁড়ের ব্যবস্থা হয়েছিল।
বিজেপির বিক্ষোভে স্থানীয় প্রসঙ্গ মিশেছিল বাঁকুড়াতেও। জেলার পাত্রসায়রের কাঁকরডাঙা মোড়ে শনিবার বিজেপির জমায়েত ঘিরে গোলমালেই গুলিবিদ্ধ হন এক স্কুল ছাত্র ও দুই বিজেপি কর্মী। ছাত্রটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ দিন বাঁকুড়ায় জেলা পুলিশ সুপারের অফিসের কাছে বিক্ষোভ জমায়েতে হাজির হয়ে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুল ছাত্রের উপরেও গুলি চালাচ্ছে রাজ্যের পুলিশ। পাত্রসায়রের ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাইছি আমরা।’’
জঙ্গলমহল থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও এ দিন বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে পুলিশ সুপারের দফতরের অদূরে বিক্ষোভ হলেও ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ায় অবস্থান হয়েছে জেলাশাসকের অফিসের সামনে। নদিয়ার কল্যাণীতে থানার সামনে মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। কৃষ্ণনগরে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার আগে দফতরে ঢোকার মুখে ঘণ্টা দুয়েক অবস্থানও হয়েছে।
আসানসোলে আবার পুলিশ কমিশনারের অফিস ঘেরাও করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে বিজেপি কর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। তবে কোথাওই বড় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।