Bardhaman

শ্বশুরবাড়িতে ‘নির্যাতিতা’ বধূকে থানায় ‘মার এবং কুপ্রস্তাব’! পূর্ব বর্ধমানে অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টর

শ্বশুরবাড়িতে ‘নির্যাতিতা’ বধূকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৫ ১৮:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

শ্বশুরবাড়িতে ‘নির্যাতিতা’ বধূকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল খোদ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মারধর-সহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন এক বধূ। বিহিত চেয়ে ওই বধূ জেলার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থও হয়েছেন। যদিও বধূর আনা এমন অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা পুলিশের কোনও শীর্ষকর্তা।

Advertisement

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে বিশদে জেনে তার পর প্রতিক্রিয়া দিতে পারব।’’

ওই বধূর বাপের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের রায়নায়। তাঁর বিয়ে হয়েছিল মন্তেশ্বর থানা এলাকার এক যুবকের সঙ্গে। বধূ গত ২১ এপ্রিল জেলার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। কোনও পুত্রসন্তান নেই। সেই কারণে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যেরা তাঁর উপর অত্যাচার করা শুরু করে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বধূর বক্তব্য, তিনি তাঁর মেয়েদের মুখ চেয়ে অত্যাচার সহ্য করেই ১২ বছর স্বামীর সঙ্গে থেকেছেন। গত বছরের ২৫ নভেম্বর তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টাও করেছিলেন। কোনও রকমে তিনি প্রাণে বাঁচেন। পরে তাঁর দুই মেয়েকে নিজেদের কাছে রেখে দিয়ে তাঁর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বাবার বাড়ি ফিরে গিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি রায়না থানায় বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছিলেন।

বধূর অভিযোগ, রায়না থানায় মামলা চলাকালীন গত ১৪ এপ্রিল তাঁর স্বামী তাঁকে শ্বশুর বাড়িতে ডেকে পাঠান। সেইমতো তিনি ওই দিন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যান। সেটা মেনে নিতে না পেরে তাঁর দেওর, জা,শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে টেনে হিঁচড়ে তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বেরোতে না চাইলে তাঁরা তাঁকে মারধর করে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দেন। সেখানে তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন তাঁরা। সে বারও কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। পড়শিরা পুলিশে খবর দিলে মন্তেশ্বর থানার সাব-ইন্সপেক্টর ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। এর পর ওই পুলিশ অফিসারই তাঁকে গালিগালাজ করা শুরু করেন। স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দিয়ে তাঁকে মারধরও করান। তাঁকে থানাতেও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও অত্যাচার চলে। কুপ্রস্তাবও দেন ওই পুলিশ অফিসার। বধূর দাবি, ওই ঘটনার পর শ্বশুর ও স্বামী তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে তাঁকে কালনা আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত জামিন মঞ্জুর করলে তিনি রেহাই পান।

যদিও ওই পুলিশ অফিসার সব অভিযোগ মিথ্যা বলেই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মারধর বা কুপ্রস্তাব তো দূর, ওই বধূর সঙ্গে বাক্যালাপ পর্যন্ত করিনি। ওই দিন ঘটনাস্থলেও যাইনি। গিয়েছিলেন মহিলা কনস্টেবলরা। থানাতেও যা ঘটেছে, সব সিসি ক্যামেরায় ধরা আছে। বরং বধূই এক দিন আমাদের ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছিলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement