কাঁটা দিয়ে হুল তোলার চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সোমবার রাজ্য বিজেপি-র সদর দফতরে ‘ঘুষ’ দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের দুই কর্মী। এই অভিযোগকে সামনে রেখে বিজেপি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছে। নিজের গা থেকে নারদ কাণ্ডের কালি মুছতে পুলিশ পাঠিয়ে বিজেপির গায়ে কালি লাগানোর চক্রান্ত করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই। এমনই অভিযোগ রাহুল সিংহের।
এমনিতেই নারদ-কাণ্ডের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ঘোরতর অস্বস্তিতে তৃণমূল। গোড়া থেকেই তাদের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ’ এবং ‘চুরি’র অভিযোগ তুলে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। রাজ্যে ভোটপ্রচারে এসে রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদীও ছেড়ে কথা বলেননি। তার মধ্যেই এ দিনের ঘটনা ফের এক প্রস্থ বিপাকে ফেলল তৃণমূলকে। যদিও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘যা কিছু খারাপ সব তৃণমূল করে। যা কিছু ভাল, সব ওরা করে। রাজ্যের মানুষ জানেন, যা কিছু ভাল কাজ সব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই করেছেন।’’
ঠিক কী হয়েছে এ দিন?
রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথা জোড়াসাঁকো কেন্দ্রের প্রার্থী রাহুল সিংহের দাবি, খড়্গপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার পরেই দুই ব্যক্তি তাঁর আপ্তসহায়ককে ফোন করে রাহুলবাবুর সঙ্গে দেখা করার অনুরোধ জানান। সাংগঠনিক কাজেই তাঁরা দেখা করতে চেয়েছিলেন বলে এ দিন সকালে রাজ্য বিজেপি-র সদর দফতরে তাঁদের আসতে বলা হয়। রাহুলবাবু অভিযোগ, দেখা করার পরে তাঁরা প্রথমে নিজেদের বেকার যুবক হিসেবে পরিচয় দেন এবং তাঁর কাছে সাহায্য চান। এর পরেই ওই দুই যুবক বাংলাদেশে গরু পাচারের জন্য রাহুলবাবুর সাহায্য চেয়ে তাঁকে ঘুষ দিতে চান। রাহুলবাবুর কথায়, “এর পরেই জামার কলার ধরে আমি থাপ্পড় মারি ওদের। সঙ্গে সঙ্গে জোড়াসাঁকো থানায় ফোন করে ঘটনার কথা জানানো হয়।’’
পুলিশ আসার পর জানা যায় ওই বেকার যুবকেরা আসলে কলকাতা পুলিশের কর্মী। স্পেশাল ব্রাঞ্চের এএসআই শুভাশিস রায়চৌধুরী ও কনস্টেবল আমিনুর রহমানকে আপাতত পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে সূত্রের খবর। বিজেপি-র দাবি, ওই দু’জনকে ‘বলির বখরা’ করা হয়েছে। রাহুলবাবু বলেন, “আসল রহস্য এ ভাবে চাপা দেওয়া যাবে না। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতে জড়িত আছেন।” যদিও কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে তদন্ত চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই দুই কর্মী ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই বিজেপি-র সদর দফতরে গিয়েছিলেন।
আরও পডুন