বুলা চৌধুরীর হারানো পদক উদ্ধার করল পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে বুলা চৌধুরীর পদ্মশ্রীর ‘অভিজ্ঞান পদক’ উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সাঁতারুকে শ্রীরামপুরে ডিসিপির দফতরে ডেকে উদ্ধার হওয়া পদক দেখানো হয়। হারানো ছোট পদকটি হাতে পেয়ে বুলার মুখে হাসি ফোটে। পরে তিনি বলেন, ‘‘মোট ৩০৮টি পদক উদ্ধার করেছে পুলিশ। কয়েকটা পদক এখনও পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ যে ভাবে কাজ করেছে, আমি ভীষণ খুশি। পুলিশকেও পদক দেওয়া উচিত।’’
গত ১৫ অগস্ট বুলার হিন্দমোটরের দেবাইপুকুরের বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। রাতে বাড়ির পিছনের গ্রিল ভেঙে দরজা কেটে ভিতরে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। চুরি গিয়েছিল ওই বাড়িতে থাকা বুলার একাধিক পদক। বুলার পদ্মশ্রীর মূল পদকটি তাঁর কসবার বাড়িতে ছিল। কিন্তু পদ্মশ্রীর মূল পদকের সঙ্গে যে স্মারক, অর্থাৎ ছোট পদক (যে পদকটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরে যেতে পারেন পদ্মশ্রী প্রাপকেরা) দেওয়া হয়, সেটি হিন্দমোটরের বাড়িতে ছিল। সেই পদকটিও চুরি যায়।
পুলিশ তদন্তে নেমে দু’দিনের মধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় ২৯৫টি পদক। সেই সময় বুলা জানিয়েছিলেন, তাঁর সমস্ত পদক তখনও উদ্ধার হয়নি। সে কথা পুলিশকেও জানিয়েছিলেন সাঁতারু। শ্রীরামপুরের ডিসিপি অর্ণব বিশ্বাসও তাঁকে কথা দিয়েছিলেন, বাকি পদকও উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।
কথা রাখল পুলিশ। উত্তরপাড়া থানার আইসি অমিতাভ সান্যালের নেতৃত্বে একটি দল তদন্ত চালিয়ে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে। তাঁদের এক জনের নাম শেখ শামিম। পুলিশের দাবি, তিনিই মূল অভিযুক্ত। তাঁর কাছ থেকে আরও ১৩টি পদক উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যেই ছিল অভিজ্ঞান পদকটি। সেই সঙ্গে মহম্মদ চাঁদ নামে আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
হারানো পদক হাতে পাওয়ার পর বুলা বলেন, ‘‘ছ’বছর বয়স থেকে সাঁতার কাটছি। সাত সমুদ্র পার করেছি। এশিয়ান গেমসে পদক জিতেছি। সারা জীবনের স্বীকৃতি হিসাবে ‘অর্জুন’ পেয়েছি। পদ্মশ্রী পেয়েছি। সেই পদক চুরি হওয়ায় খুব খারাপ লেগেছিল। তবে পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে কাজ করে ওই পদক ফিরিয়ে দিয়েছে। এর জন্য পুলিশকে মেডেল দেওয়া উচিত। একটা পদক জিততে যে কী পরিশ্রম করতে হয়েছে, তা আমি জানি। তবে এই পদক আমি নিজের জন্য জিতিনি। জিতেছি দেশের জন্য। এই পদক আমাদের সকলের।’’