আদিবাসী আন্দোলনে তাণ্ডব রায়গঞ্জে, পুলিশ সুপারকে শো-কজ নবান্নর

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আদিবাসীদের আন্দোলন রুখতে পুলিশ কেন ব্যর্থ হয়েছে, রাজ্য পুলিশের কর্তাদের কাছে সেই প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো এ দিন রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজি মর্যাদার একাধিক অফিসার দিনভর দফায় দফায় জেলা পুলিশের কর্তাদের কাছে কখনও ফোন করে আবার কখনও লিখিত ভাবে গোটা ঘটনার রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন।

Advertisement

গৌর আচার্য

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

ফাইল চিত্র।

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে আদিবাসীরা আন্দোলন করবেন, সে খবর উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দারা জানতেন। কিন্তু সেই আন্দোলন যে তাণ্ডবের চেহারা নিতে পারে, তার আগাম খবর পাননি গোয়েন্দারা। তাই শুক্রবার রায়গঞ্জে আদিবাসী আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ। জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরকে শো-কজও করা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আদিবাসীদের আন্দোলন রুখতে পুলিশ কেন ব্যর্থ হয়েছে, রাজ্য পুলিশের কর্তাদের কাছে সেই প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো এ দিন রাজ্য পুলিশের ডিজি ও আইজি মর্যাদার একাধিক অফিসার দিনভর দফায় দফায় জেলা পুলিশের কর্তাদের কাছে কখনও ফোন করে আবার কখনও লিখিত ভাবে গোটা ঘটনার রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। জেলা পুলিশ সুপার স্বীকারও করে নেন, ‘‘শহর জুড়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে, তা আগাম জানা ছিল না। জানা থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হত। পুলিশ আন্দোলন রোখার চেষ্টা করলে বহু মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।’’

পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিনের ঘটনায় আপাতত অজ্ঞাতপরিচয় শতাধিক আদিবাসীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় শহরে দাঙ্গা বাঁধানোর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে। তাতে যেমন যেমন নাম পাওয়া যাবে, সেই মতো মামলায় অভিযুক্ত আদিবাসী নেতাদের নাম যোগ করা হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন:আক্রমণের নিশানায় পুলিশ, বাহিনী প্রিয় মোর্চার

পুলিশের দাবি, ওই দিন আদিবাসীরা কেউ ব্যাগে আবার কেউ পোশাকের নীচে পেট্রোল বোমা লুকিয়ে এনেছিলেন। সেগুলিতে আগুন ধরিয়ে বাসস্ট্যান্ড চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আদিবাসীদের এই আন্দোলনের কথা পুলিশের আগাম জানা থাকলে পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকার জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে নাকা তল্লাশি চালিয়ে রুখে দিতে পারত। আদিবাসী সমাজশিক্ষণ সাংস্কৃতিক সংস্থার তরফে জ্যাঠা মুর্মু শনিবার বলেন, ‘‘পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় মহিলারা সুরক্ষিত নন। তাই আদিবাসীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। আদিবাসীরা কোথাও ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগ করেননি।’’

এ দিন আদিবাসীদের তাণ্ডবের প্রতিবাদে বন্‌ধ ও পরিবহণ ধর্মঘটের ডাকে রায়গঞ্জে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা অনেক জায়গায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুলিশ প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন