নাক ফাটল এসডিপিও-র

সর্ডিহায় কুড়মি-পুলিশ ধুন্ধুমার, হল না রেল রোকো

রেল রোকোর ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। সেই মতো প্রস্তুত ছিল পুলিশ বাহিনীও। কিন্তু সোমবার সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে কুড়মি সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধের সাক্ষী থাকল ঝাড়গ্রামের সর্ডিহা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সর্ডিহা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০৪
Share:

তখনও চলছে ধস্তাধস্তি।

রেল রোকোর ঘোষণা করা হয়েছিল আগেই। সেই মতো প্রস্তুত ছিল পুলিশ বাহিনীও। কিন্তু সোমবার সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে কুড়মি সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধের সাক্ষী থাকল ঝাড়গ্রামের সর্ডিহা। এমনকী ইটের আঘাতে নাক ফাটল ঝাড়গ্রামের এসডিপিও বিবেক বর্মার। পাল্টা লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধেও।

Advertisement

ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক হলেও এতে কুড়মি-মাহাতোদের কোনও ভূমিকা নেই। মিছিলের পিছনে কিছু দুষ্টু ছেলে ছিল, তারা এটা করেছে। কে পিছন থেকে ইট ছুড়ল সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।” লাঠি চালানোর ঘটনাও অস্বীকার করেছেন পুলিশ সুপার।

কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি তালিকায় পুনরায় অন্তর্ভুক্তি-সহ একাধিক দাবিতে সোমবার চার রাজ্যে মহামিছিল ও রেল রোকো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। রীতিমতো প্রচারপত্র ছড়িয়ে সংগঠনের তরফে ঝাড়খণ্ড, বাংলা, বিহার ও ওড়িশায় কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজ্যের তালিকায় ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর ও পুরুলিয়া। দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর-টাটা শাখার সর্ডিহা স্টেশনে রেল অবরোধ কর্মসূচির কথাও জানানো হয়েছিল। এমনকী সংগঠনের দাবি ছিল, রেল কর্তৃপক্ষ এবং কেন্দ্রীয় আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জুয়েল ওঁরামকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

Advertisement

পরিকল্পনা মাফিক সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ সর্ডিহা স্টেশনে রেল অবরোধ ঠেকাতে হাজির ছিল পুলিশ। মিছিল করে স্টেশনে জমায়েত করছিলেন কুড়মি সমর্থকরা। নেতৃত্বে ছিলেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রাজেশ মাহাতো। সমর্থকদের হাতে ছিল কমলা পতাকা, তাতে লেখা ছিল ‘জয় বরাম’। আর মাথায় ‘কুড়মি-সেনা’ লেখা কাপড় বাঁধা ছিল।

জখম এসডিপিও

ঘটনার সূত্রপাত দুপুর ১২টা নাগাদ। কয়েকজন কুড়মি সমর্থক স্মারকলিপি জমা দেওয়ার বিষয়ে এসডিপিওর সঙ্গে কথা বলতে আসেন। সেই সময়ই একটা ইট এসে পড়ে এসডিপিওর মুখে। নাক ফেটে যায় তাঁর। আর এরপরই পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কুড়মি সমর্থকরা এগিয়ে আসতে থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কুড়মি সমর্থকদের দাবি, তাঁদের জনা সাতেক সমর্থক জখম হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে অবশ্য দাবি, এসডিপিও আহত হতেই মিছিলের কয়েকজন পালাতে গিয়ে পড়ে আহত হন। এসডিপিও এবং ওই জখম সাত কুড়মি সমর্থকদের মানিকপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সকলকেই অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দুপুর দেড়টা নাগাদ রাজেশ মাহাতো তিনজন প্রতিনিধি নিয়ে ঝাড়গ্রাম মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতোর হাতে স্মারকলিপি জমা দেন। রাজেশের কথায়, ‘‘কুড়মি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতি তালিকায় পুনরায় অন্তর্ভুক্তিই আমাদের প্রধান দাবি।’’ আর এ দিনের পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘দোষটা পুলিশেরই। ওরাই আমাদের প্রথমে লাঠি দিয়ে মারে। আর ওই ইট আমাদের দলের কেউ ছোড়েনি। পুলিশের লাঠিতেই নাক ফেটেছে এসডিপিওর।’’

(ছবি:দেবরাজ ঘোষ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন