মোবাইল টাওয়ার নিয়েও আমরা-ওরা সাংসদের

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নয়। শাসকের ঘর আগলানোর বিষয়ও নয়। যৎকিঞ্চিৎ একটি মোবাইল টাওয়ার নিয়েও ‘আমরা-ওরা’!

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪৫
Share:

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নয়। শাসকের ঘর আগলানোর বিষয়ও নয়। যৎকিঞ্চিৎ একটি মোবাইল টাওয়ার নিয়েও ‘আমরা-ওরা’!

Advertisement

শ্রীরামপুরের মল্লিকপাড়ার শেখ আব্বাসের ‘অপরাধ’, তিনি ভোটে জোট-প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছিলেন! তাই এলাকার পরিবেশ বাঁচানোর আর্জি নিয়ে সাংসদের কাছে গিয়ে তাঁকে শুনতে হল গালিগালাজ, এলাকার কাউন্সিলরের কাছে খেতে হল ঘাড়ধাক্কা— অভিযোগ এমনটাই।

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও রাখঢাক করছেন না। স্পষ্ট বলছেন, ‘‘সুবিধা নেওয়ার সময় ওঁরা আসবে। আর ভোটে তৃণমূলকে হারাতে প্রাণপাত করবে। দু’টো একসঙ্গে চলতে পারে না। এই ধরনের সুবিধাবাদী অবস্থান বরদাস্ত করা যায় না। উচিতও নয়।’’

Advertisement

হয়েছেটা কী? শ্রীরামপুরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিকপাড়ায় একটি ক্লাবের ছাদে সম্প্রতি মোবাইলের টাওয়ার বসানো হয়। ক্লাবে একটি অঙ্গনওয়াড়ি স্কুল চলে। টাওয়ারে পরিবেশের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় এলাকার অনেকেই তা বসানো নিয়ে আপত্তি তোলেন। তাঁদের হয়ে সাংসদের কাছে দরবার করতে যান আব্বাস। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কাউন্সিলর ওখানে ছিলেন। তিনিই সাংসদকে জানান, আমি জোটপ্রার্থীর হয়ে কাজ করেছিলাম। শুনেই সাংসদ গালিগালাজ করেন। টাওয়ারটি যাতে যথাস্থানে থাকে, সে ব্যাপারে কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেন।’’

এখানেই শেষ নয়। এর কিছু দিন পরে মল্লিকপাড়ায় দলবল নিয়ে গিয়ে আব্বাসকে কাউন্সিলর উত্তমবাবু ঘাড়ধাক্কা দেন এবং টাওয়ার বসানো নিয়ে আপত্তি তোলা যাবে না বলে ফরমানও দেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে সাংসদ ঘনিষ্ঠ উত্তমবাবু বলেন, ‘‘আব্বাসকে কেউ মারধর করলে আমি দুঃখিত। ও নিজেও মোবাইল ব্যবহার করে। টাওয়ার ছাড়া মোবাইল চলবে? ওই এলাকায় যেখানেই টাওয়ার বসছে, আব্বাস সেখানেই ঘোঁট পাকানোর চেষ্টা করছে।’’

অতঃকিম? আব্বাসরা টাওয়ার নিয়ে আপত্তির কথা পুলিশকে জানিয়েছেন। পুরসভাকে জানিয়েছেন। শাসক দলের যেখানে সায়, সেখানে কী হবে, তা নিয়ে আব্বাসদের মধ্যে যখন জল্পনা চলছে, তখন আশার কথা শুনিয়েছেন পুরপ্রধান, তৃণমূলেরই অমিয় মুখোপাধ্যায়।

অমিয়বাবু ‘আমরা-ওরা’ করেননি। অবিলম্বে মোবাইল টাওয়ারটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হাসি ফুটেছে আব্বাসদের।

মধুরেন সমাপয়েৎ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন