—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আংটি বন্ধক নিয়েছিলেন। বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আংটি নাকি নকল! তাই আংটি দিয়ে টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে খুন হলেন ব্যবসায়ী। এই ঘটনায় শোরগোল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। তরজা তৃণমূল ও বিজেপির।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম আশিস গুড়িয়া। নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের সাতেঙ্গাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আশিসের (৪৫) দেহ মেলে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে। নিজের দোকানের সামনে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় আশিসের দেহ পড়ে থাকতে দেখে পরিবার। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে।
পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পরেও আশিস বাড়ি না ফেরায় তাঁর খোঁজ শুরু করেন সকলে। ঠিক দোকানের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ব্যবসায়ীকে। অভিযোগ, যুবকের মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, খুনের নেপথ্যে রয়েছেন স্থানীয় ভেটুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ রাজু নামের এক ব্যক্তি। আশিসের বাবা অমলেন্দু গুড়িয়া বলেন, “রাজু নামে ব্যক্তি একটি সোনার আংটি আমার ছেলের কাছে বন্ধক রেখে টাকা নিয়েছিল। পরে জানা যায় ওটা নকল। এই নিয়েই আমার ছেলের সঙ্গে ঝামেলা হয়। রাজুকে দোকানে ডেকে পাঠিয়ে টাকা ফেরত চেয়েছিল ও। আর নকল সোনার আংটি নিয়ে যেতে বলেছিল। বৃহস্পতিবারও রাজু আমাদের দোকানে যায়। কিন্তু টাকা ফেরত দেবে না বলে অশান্তি করেছিল। সেই নিয়ে তর্কাতর্কি হয়েছিল। পরে ও-ই আমার ছেলেকে খুন করে পালিয়েছে।’’
অন্য দিকে, এই খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক শোরগোল শুরু হয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকায়। অপরাধের ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেত্রী তথা নন্দীগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মমতা পাত্রের অভিযোগ, “এলাকায় দিনের পর দিন পুলিশের মদতে রমরমিয়ে অবৈধ মদের ব্যবসা চলছে। মৃত ব্যক্তির ওই এলাকায় অবৈধ মদের দোকান ছিল। এখানে বাইরে থেকে বিভিন্ন ধরনের লোকজন আনাগোনা করত। বার বার পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী প্রশাসন।” বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলে নেতা শেখ কাজেহার বলেন, “এলাকায় অবৈধ মদের দোকান নিয়ে অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, প্রশাসন সেটা তদন্ত করে দেখছে। দোষীরা কেউ ছাড় পাবে না। তাদের যাতে কঠোর শাস্তি হয়, প্রশাসনের কাছে আমরা আবেদন জানাব।”