বিজেপিতে যোগ দিতে হবে, জানতেনই না ওঁরা!

দলের অসংগঠিত শ্রমিক সেলের রাজ্য সভাপতি অজয় অগ্নিহোত্রী বলেন, ‘‘প্রায় ৫০০ লোক বিজেপিতে যোগ দিতে এসেছেন। যাঁদর মধ্যে শ’তিনেক মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ এবং শ’দুয়েক দক্ষিণ ২৪ পরগনার সান্ধু-সন্ত সম্প্রদায়ের মানুষ।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিজেপির দাবি, সকলেই দলে যোগ দিতে এসেছেন। অথচ যাঁদের দেখিয়ে তা দাবি করা হল, তাঁদের একাংশের বক্তব্য, বিজেপির দফতরে আনা হচ্ছে, তাঁরা জানতেনই না। ট্রেন-বাসে বিনামূল্যের পাস, স্বাস্থ্যবীমা এবং ভাতা দেওয়া হবে বলে তাঁদের কলকাতায় আসতে বলা হয়েছে। তার জন্য টাকাও দিয়েছেন তাঁরা। যা নিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হল বিজেপির রাজ্য নেতাদের। তৃণমূলের মহা সচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘এ তো প্রতারণা! এতেই প্রমাণ হয়, বিজেপি মরিয়া হয়ে উঠেছে।’’

Advertisement

বুধবার রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। দলের অসংগঠিত শ্রমিক সেলের রাজ্য সভাপতি অজয় অগ্নিহোত্রী বলেন, ‘‘প্রায় ৫০০ লোক বিজেপিতে যোগ দিতে এসেছেন। যাঁদর মধ্যে শ’তিনেক মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ এবং শ’দুয়েক দক্ষিণ ২৪ পরগনার সান্ধু-সন্ত সম্প্রদায়ের মানুষ।’’ রাজ্য বিজেপির সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়, সহ সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরীর উপস্থিতিতে যোগদানের অনুষ্ঠানও হয়। আর ঠিক তখনই দফতরের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ‘সাধু-সন্ত’দের একাংশ দাবি করেন, বিজেপি নয়, কোনও রাজনৈতিক দলেই যোগদানের কোনও ইচ্ছা তাঁদের নেই। বানতলা থেকে আসা তেমনই এক বৈষ্ণব সাধু রঘুনন্দন দাসের বক্তব্য, ‘‘৬০০ টাকা নিয়ে এক জন বলল কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হবে। সঙ্গে রাখতে হবে আধার কার্ডের ফোটোকপি এবং তিনটে পাসপোর্ট সাইজ ছবি। যা দেখে আমাদের ট্রেন-বাসের ফ্রি পাস দেওয়া হবে। ভাতারও ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’’

অথচ বিশ্বপ্রিয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘এমন কোনও প্রতিশ্রুতি তাঁদের দেওয়া হয়নি। তবে যাতে তাঁরা ভাতা এবং তীর্থযাত্রায় যাওয়ার জন্য ট্রেনের বিনামূল্যের পাস পান, তার জন্য আমরা চেষ্টা করব।’’ টাকা নেওয়ার বিষয়টিও তিনি উড়িয়ে দেন। অজয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের ভয়ে ওঁরা এ সব বলছেন।’’ কিন্তু রঘুনন্দনের মতো মায়াপুর গৌরীয় মঠের সদস্য দ্বৈপায়ন দাস, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিধান হালদাররাও জানান, দলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতেন না। প্রত্যেকেই ৬০০ টাকা দিয়েছেন কলকাতায় আসার জন্য। যে ভদ্রলোক তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ, সেই মধুসূদন অধিকারীকে এ দিন রাজ্য দফতরে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নেতারাও ওই ব্যক্তিকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন।

Advertisement

অন্য দিকে, মতুয়া সম্প্রদায়ের যাঁরা এ দিন এসেছিলেন, তাঁদের দাবি, মতুয়া মহাসংঘের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর প্রতিনিধি তাঁরা। তাঁরা অবশ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়টি জানতেন বলেই জানিয়েছেন। তবে পার্থবাবুর দাবি, মতুয়াদের বিক্ষুব্ধ এবং মূলস্রোত, সকলেই তৃণমূলের সঙ্গে আছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন