আড়শায় মেলা পোস্টার।
আগামী ২৫ মে জঙ্গলমহলে বন্ধের সমর্থনে ফের পোস্টার মিলল পুরুলিয়ায়। এ বার আড়শার কাঁটাডি হাটতলা ও কাঁটাডি আমবাগান এলাকায়। রবিবারের ঘটনা। একই পোস্টার এ দিন অযোধ্যা পাহাড়তলির কুমিরডিহা এলাকা থেকেও মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। আগের দিনই বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া এলাকার কয়েকটি গ্রামে ও বড় উরমা এলাকায় যে ধরনের পোস্টার পাওয়া গিয়েছিল, এ দিনও প্রায় একই ধরনের পোস্টার দেখা যায়. তবে পোস্টারগুলি সিপিআই (মাওবাদী) নামাঙ্কিত নাকি পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনগণের কমিটি নামাঙ্কিত তা জানা যায়নি। পুলিশ অবশ্য এ দিন পোস্টার মেলার খবর অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জুলাই মাসে মাওবাদীদের শহিদ সপ্তাহ চলাকালীন সপ্তাহের প্রথম দিনে কাঁটাডি হাটতলা এলাকায় একটি শহিদ বেদির পাশে লাল পতাকা উড়তে দেখা গিয়েছিল। এ দিনও সেই এলাকাতেই পোস্টার দেখতে পাওয়া যায়। বন্্ধের আহ্বানের পাশাপাশি জনগণের কমিিটর সাজাপ্রাপ্ত নেতা ছত্রধর মাহাতো, সুখশান্তি বাস্কে ও শম্ভু সোরেনদের সাজার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে ওই পোস্টারে।
২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আড়শার কাঁটাডি রক্ষী শিবির লুঠ করে মাওবাদীরা। পুরুলিয়া-জামশেদপুর জাতীয় সড়কের পাশে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরের মধ্যেই ছিল এই শিবিরটি। তার পর আড়শায় একের পর এক মাওবাদী নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। ফের সেই কাঁটাডি বা বলরামপুর এলাকায় এ ধরনের পোস্টার মেলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। রাজ্যে পালাবদলের পরেই জঙ্গলমহলে একদা মাওবাদীদের গণসংগঠন হিসেবে কাজ করা আদিবাসী মূলবাসী জনগনের কমিটির প্রথম সারির নেতা অঘোর হেমব্রম-সহ অনেকেই জঙ্গলমহল উন্নয়ন বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি গড়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধেই আন্দোলন শুরু করেন। এই কমিটির মুখপাত্র অঘোর হেমব্রম বলেন, ‘‘ওরা এই সুযোগে দু-চারটে পোস্টার এদিক-সেদিক লাগাচ্ছে। লিঙ্কম্যানরা কোথাও কোথাও একটু সক্রিয় হয়েছে। তবে বিষয়টি প্রশাসন দেখবে।’’
এ দিন বলরামপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলরামপুরের দিকে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে তিনি আড়শায় দাঁড়িয়ে কর্মীদের খোঁজখবর নেন। দল সূত্রের খবর, তখনই কর্মীরা মন্ত্রীকে উদ্বেগের সঙ্গে ফের মাওবাদীরা এলাকায় পা রাখার চেষ্টা করছে বলে জানান। আড়শা ব্লকের মধ্যে জাতীয় সড়কের উপরে অবস্থিত কাঁটাডির গুরুত্বের কথাও মন্ত্রীকে জানান কর্মীরা। কর্মীদের কাছে পরিস্থিতির কথা জেনে শান্তিরামবাবু পুলিশ সুপারের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। পরে শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘পোস্টার কয়েকটি মিলেছে। আমি বিষয়টি পুলিশ সুপারকে দেখতে বলেছি।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, কাঁটাডি জনপদটির অবস্থানের কথা বিচার করে এখানে ফের একটি রক্ষী শিবির করার কথা শান্তিরামবাবু পুলিশকে বলেছেন। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার অবশ্য বলেন, ‘‘শনিবার কয়েকটি পোস্টার মিলেছিল। এদিন পোস্টার মেলার কোনও খবর নেই।’’