হাসি কেন মুছল, জঙ্গলমহলে নজর প্রশান্তের

তৃণমূলের অন্দরে ভোট পরবর্তী পর্যালোচনাতেও তাই বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে জঙ্গলমহল। এলাকা পুনরুদ্ধারের ভার মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে সঁপেছেন মমতা।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০২:৫০
Share:

হাসি মুছেছে। লোকসভায় গেরুয়া উত্থানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শূন্য হাতে ফিরিয়েছে তাঁর সাধের জঙ্গলমহল।

Advertisement

তৃণমূলের অন্দরে ভোট পরবর্তী পর্যালোচনাতেও তাই বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে জঙ্গলমহল। এলাকা পুনরুদ্ধারের ভার মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে সঁপেছেন মমতা। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বিপর্যয় সামলানোর ভার নেওয়া ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরেরও পাখির চোখ জঙ্গলমহলের জেলাগুলি।

তৃণমূলেরই এক সূত্রে খবর, প্রশান্তের সংস্থার কর্মীরা আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্কের ধসের কারণ খোঁজা শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, সল্টলেকে অফিস খুলে কাজ করছে প্রশান্তের সংস্থা। সেখানে পেশাদার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের একাংশ এ রাজ্যের বাসিন্দা, ভিন্ রাজ্যের লোকজনও রয়েছেন। ইতিমধ্যে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে ওই সংস্থার যে সব কর্মী সমীক্ষার কাজ শুরু করেছেন, তাঁরা উচ্চশিক্ষিত ও পেশাদার। অনেকেরই গবেষণাধর্মী কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। অনেকে একাধিক সংস্থার হয়ে গ্রামোন্নয়নে সমীক্ষার কাজ করেছেন।

Advertisement

মাওবাদী নাশকতায় দাঁড়ি টেনে জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরানো তাঁর সরকারের কৃতিত্ব বলে দাবি করেন মমতা। জঙ্গলমহলের উন্নয়নে কয়েক বছরে প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে বিস্তর। ঝাঁ চকচকে রাস্তা, দু’টাকা কিলোর চাল, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, সবুজসাথীর সাইকেল— কোনও কিছুই লোকসভা ভোটে তৃণমূলের অনুকূলে আসেনি। জঙ্গলমহল জুড়ে জয়জয়কার হয়েছে বিজেপির।

কেন এই পরিস্থিতি, মূলত তাই বোঝার চেষ্টা করছেন প্রশান্তের সংস্থার সমীক্ষকেরা। বিগত পঞ্চায়েত, বিধানসভা, লোকসভায় কোন দল কত ভোট পেয়েছে, গত কয়েক বছরে সেই ভোটের ওঠানামা কেমন, কী হারে কার ভোট বেড়েছে, কার ভোট কমেছে— সবই খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। পরের ধাপে গ্রামস্তর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনমত সমীক্ষা হওয়ার কথা। সম্প্রতি তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন প্রশান্ত। এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘ওই বৈঠকে প্রশান্ত তাঁর কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ওঁর কথায় মনে হয়েছিল উনি আদিবাসীদের মন বোঝার চেষ্টা করতেই পারেন।’’

ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল নেতারা অবশ্য সরাসরি এ নিয়ে ভাঙছেন না। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘আমরাও দলীয় স্তরে এ নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছি। পাশাপাশি ব্লক এবং জেলা স্তরে দলের আদিবাসী শাখা সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করছি।’’ ঝাড়গ্রামের জেলা তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল দত্তেরও বক্তব্য, ‘‘সব স্তরেই মূল্যায়ন চলছে। ত্রুটি-বিচ্যুতি নিশ্চয়ই সংশোধন করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন