Deucha Panchami

‘ডেউচা-পাঁচামিকে স্যালুট’, কাজ শুরুর জন্য বাণিজ্য সম্মেলন থেকেই অভিনন্দন মমতার, ধন্যবাদ স্থানীয়দের

গত দেড় সপ্তাহ ধরেই প্রশাসনিক মহলে গুঞ্জন ছিল ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা উত্তোলনের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে। কিন্তু তা যে বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মমতা ঘোষণা করবেন, তা অনেকেই ভাবেননি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫৬
Share:

ডেউচা-পাঁচামির কাজ শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।

বুধবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শুরুর দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলন, ‘‘কাল (বৃহস্পতিবার) থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে ডেউচা-পাঁচামিতে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথা মতোই বৃহস্পতিবার সকালে ভিতপুজো হয়ে গেল কয়লাখনি এলাকায়। তার পরে বাণিজ্য সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় মমতা বললেন, ‘‘ডেউচা-পাঁচামিকে স্যালুট। ওখানে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি ওখানকার মানুষকে ধন্যবাদ জানাই।’’

Advertisement

বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের ডেউচা পাঁচামি এলাকা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা ব্লক হতে চলেছে বলে দাবি করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আগামী ১০০ বছর আর কাউকে চিন্তা করতে হবে না!’’

গত দেড় সপ্তাহ ধরেই প্রশাসনিক মহলে গুঞ্জন ছিল যে, ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা উত্তোলনের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে। কিন্তু তা যে বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মমতা ঘোষণা করবেন, তা অনেকেই ভাবেননি। যদিও প্রস্তুত ছিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। উল্লেখ্য, পুজোর পর থেকেই ডেউচা-পাঁচামির ভিতপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। জেলা সফরে গিয়েও এ ব্যাপারে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

ওই এলাকায় কয়লার স্তর পর্যন্ত পৌঁছনোর আগে ব্যাসল্ট পাথরের পুরু স্তর রয়েছে। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘চাঁদা মৌজায় সরকারি খালি জমিতে কাজ শুরু হয়েছে। কয়লা তুলতে গেলে আগে ব্যাসল্ট সরাতে হবে। আজ থেকে সেই কাজ শুরু হয়ে গেল।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে জল-জমি-জঙ্গল রক্ষা করেই সমস্ত কাজ করবে প্রশাসন।

যদিও কাজ শুরুর আগে বৃহস্পতিবার সকালে তাল কেটেছিল। স্থানীয়দের একাংশ উচ্ছেদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা মিটেও যায় বলে দাবি জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের। বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘সকালের দিকে কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তা মিটে গিয়েছে। মা-বোনেরা খুশি। এখানে স্থানীয়েরাই কাজ পাবেন। ছোটখাটো কোনও সমস্যা হলে সকলে মিলে সমাধান করব। আশা করি দ্রুত প্রকল্প এগোবে।’’ তবে স্থানীয়দের ‌একাংশের দাবি, কাজের জন্য আসা গাড়ি, যন্ত্র ফেরত যেতে বাধ্য হয়েছে বিক্ষোভের কারণে। অন্য দিকে বৃহস্পতিবারই সরানো হয়েছে মহম্মদবাজার ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সব্যসাচী মণ্ডলকে।

উল্লেখ্য, ডেউচা-পাঁচামি প্রকল্প নিয়ে গোড়ার দিকে বেশ কিছু রাজনৈতিক দল, পরিবেশ ও সামাজিক সংগঠন বিরোধিতা দেখিয়েছিল। নাগরিকদের একজোট করারও চেষ্টা করেছিল তারা। কিন্তু সরকারের ‘প্যাকেজ’ সেই ক্ষোভকে দানা বাঁধতে দেয়নি বলেই অভিমত প্রশাসনিক মহলের অনেকের। যেমন জেলাশাসক বিধান বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্যাকেজের জন্যই সকলে সহমত হয়েছেন।’’ মহম্মদবাজারের ওই এলাকা জনজাতি অধ্যুষিত। ফলে সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে প্রকল্প তৈরি করা সরকারের কাছেও ‘চ্যালেঞ্জ’ ছিল। কারণ, বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর’। গত তিন বছর ধরে রাজ্য সরকারও তাড়াহুড়ো না করে ধীরেসুস্থে এগিয়েছে ডেউচা-পাঁচামিতে। বিকল্প বাসস্থানের পাশাপাশি নগদ টাকা, পরিবারের একজনকে হোমগার্ডে চাকরিতে নিয়োগপত্র দিয়েছে নবান্ন। তার পরে অবশেষে কাজ শুরু হয়ে গেল ডেউচা-পাঁচামিতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement