COVID-19

পড়ুয়াদের টিকাকরণ থেকে জীবাণুনাশের কাজ, জেলায় জেলায় স্কুল খোলার প্রস্তুতি তুঙ্গে

দক্ষিণের মতোই প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তরবঙ্গও। মঙ্গলবার ধূপগুড়ি গার্লস কলেজের ২০০ ছাত্রীকে টিকা দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২১ ২০:৪৭
Share:

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবারের একাধিক স্কুলে স্যানিটাইজ করার কাজ চলছে জোর কদমে। —নিজস্ব চিত্র।

কোথাও চলছে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করে জীবাণুনাশের কাজ। কোথাও বা শুরু হয়েছে পড়ুয়াদের টিকাকরণ। কোনও স্কুলের ভবনে চলছে মেরামতি। টানা দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলে যাবে। স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি শুরু করার কথা সোমবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণার পর স্কুল-কলেজগুলিতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জেলায় জেলায়।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবারের একাধিক স্কুলে স্যানিটাইজ করার কাজ চলছে জোর কদমে। করোনার সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে পড়ুয়াদের কড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দিকে নজর দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি করোনা নিয়ে বিশেষ ক্লাস করানোর পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। স্কুল খোলা নিয়ে মঙ্গলবার বিডিও, পুরপ্রশাসন এবং পঞ্চায়েতস্তরের প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে একটি বৈঠক করে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা প্রশাসন। বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় প্রত্যেক স্কুলে করোনা নিয়ে আলাদা ক্লাশ করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘স্কুলের ছেলেমেয়েদের উপর কড়া স্বাস্থ্যবিধি চাপিয়ে দিলেই হবে না। ওরা নিয়ম ভাঙবেই। কিন্তু করোনা নিয়ে ক্লাশ করালে ওরা অনেকটাই সচেতন হবে। পাশাপাশি যে কোনও আক্রান্তকে সাহায্যও করতে পারবে।’’ করোনা নিয়ে এই বিশেষ ক্লাশে উৎসাহ দেখিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘খুব ভাল উদ্যোগ। আশা করি স্কুল চালু হলে কোভিড নিয়ে আমরাও ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করতে পারব।’’

Advertisement
আরও পড়ুন:

মঙ্গলবার সকালে ডায়মন্ড হারবারের একটি স্কুল পরিদর্শন করেন মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিক। —নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার সকালে ডায়মন্ড হারবার হাইস্কুল, গার্লস স্কুল, সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন-সহ বেশ কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেন মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। পাশাপাশি ৯টি ব্লকের বিডিওদের স্থানীয় স্কুলগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখতে বলা হয়। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বহু স্কুলের পরিকাঠামো আগের অবস্থায় নেই। তা ছাড়া, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জেরে বহু স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। স্কুলের মেরামতিতে ইতিমধ্যেই ৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে জেলা প্রশাসন।

Advertisement

মঙ্গলবার ধূপগুড়ি গার্লস কলেজের ছাত্রীদের টিকাকরণ করা হয়। —নিজস্ব চিত্র।

দক্ষিণের মতোই প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তরবঙ্গও। মঙ্গলবার ধূপগুড়ি সুকান্ত মহাবিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ধূপগুড়ি গার্লস কলেজের ২০০ ছাত্রীকে টিকা দেওয়া হয়। টিকা নিতে আসা ধূপগুড়ি গার্লস কলেজের ছাত্রী সুস্মিতা বর্মণ এবং লাভলি পরভিন বলেন, ‘‘করোনার আতঙ্কে দীর্ঘদিন প্রায় ঘরবন্দি। স্কুলের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল না। পঠনপাঠনও বন্ধ। এ বার কলেজ খোলার খবরে খুবই খুশি।’’

হরিশ্চন্দ্রপুরের স্কুল চত্বরে পড়ে রয়েছে মদের বোতল। —নিজস্ব চিত্র।

এই প্রস্তুতির মাঝেই মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি স্কুলে গিয়ে চোখ কপালে উঠেছে সেখানকার শিক্ষকদের। মঙ্গলবার তাঁরা দেখেন, স্কুল চত্বর জুড়ে মদের বোতল, প্লাস্টিকের গ্লাস, জুয়ার খেলার পর ফেলে রাখা কাগজের টুকরো ছ়ড়িয়ে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাত হলেই গোটা চত্বরটি সমাজবিরোধীদের আস্তানা হয়ে ওঠে। নিয়মিত বসে মদের আসর, জুয়ার ঠেক। চলে হেরোইনের নেশাও। স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। টিচার ইনচার্জ অশোককুমার দাস বলেন, ‘‘এ বিষয়টি হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় আগেও জানিয়েছি। তা নিয়ে ফের অভিযোগ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন