Universities Chancellor

রাষ্ট্রপতি মুর্মুর সম্মতি মিলল না, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার বিল ফেরত এল

গত ২০ এপ্রিল ২০২৪-এ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২২ রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছিলেন। ওই বিলে প্রস্তাব করা হয়েছিল, রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:০৯
Share:

(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গে সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যপদে আপাতত কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২২–এর দু’টি সংশোধনী বিলে সম্মতি দিলেন না রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ফলে আচার্যপদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর প্রস্তাব কার্যকর হল না। আর এই সিদ্ধান্তের ফলে কলকাতার লোক ভবনে স্বস্তি ফিরেছে। কারণ, রাষ্ট্রপতি বিলগুলিতে অনুমোদন না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যপদে থেকে যাচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনের তরফেও জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল আগের মতোই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত ২০ এপ্রিল ২০২৪-এ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, ২০২২ রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছিলেন। ওই বিলে প্রস্তাব করা হয়েছিল, রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে আচার্য হিসাবে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করবেন। রাজ্য সরকার যুক্তি দিয়েছিল, এতে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গতি আসবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সরকারের ভূমিকা আরও কার্যকর হবে। তবে কেন্দ্রীয় স্তরে বিলটি খতিয়ে দেখার পর রাষ্ট্রপতি দু’টি সংশোধনী বিলে সম্মতি দেননি। এর ফলে বর্তমান ব্যবস্থাই বহাল থাকছে এবং রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসাবে রাজ্যপালই দায়িত্বে থাকবেন। রাজ্য ও রাজভবনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা এবং উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে যে টানাপড়েন চলছিল, এর ফলে সেই বিতর্ক আরও এক ধাপ এগোল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক ও শিক্ষামহলের একাংশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপাল পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হন। সেই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে গেলে সাংবিধানিক দিক থেকে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতির সম্মতি না মেলায় স্পষ্ট, প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলিতে আইনগত ও সাংবিধানিক প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে যদিও আগেই জানানো হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দীর্ঘদিন উপাচার্য নিয়োগে অচলাবস্থা কাটাতেই এই সংশোধনী আনা হয়েছে। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলি শুরু থেকেই এই বিলের বিরোধিতা করে আসছিল। বিধানসভার প্রধান বিরোধীদল বিজেপির দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বশাসন ক্ষুণ্ণ হবে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বাড়বে।

Advertisement

রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পর আপাতত রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকার ভবিষ্যতে এই বিষয়ে নতুন করে কোনও সংশোধনী আনবে, নাকি আদালতের দ্বারস্থ হবে, সে দিকেই এখন নজর। তবে আপাতত স্পষ্ট, রাজ্যের সহায়তাপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যপদে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না এবং বর্তমান কাঠামোই বহাল থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement