CM

সাক্ষরতা, স্বাস্থ্য, শান্তি বজায় রাখতেই পুরোহিত ভাতা 

প্রকল্পে বলা হয়েছে, ভাতা পেতে গেলে পুরোহিতদের সরকারি ছাপানো ফর্মে আবেদন করতে হবে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি

তাঁরা যজমানি করে দিন যাপন করেন। সম্বল বলতে সামান্য দক্ষিণা। এমন ষাটোর্ধ্ব পুরোহিতদের মাসে হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব পাশ হয়েছে। ঠিক হয়েছে, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর ‘স্টেট ওয়েলফেয়ার স্কিম ফর দ্য পুরোহিত’ প্রকল্পটি পরিচালনা করবে।

Advertisement

সরকারি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পুরোহিতরা যে এলাকায় যজমানি করেন, সেখানে তাঁদের যথেষ্ট প্রভাব থাকে। তাই তাঁদের সাক্ষরতা প্রকল্প, জনস্বাস্থ্য, সরকারি উন্নয়নমূলক কাজের প্রচারে এবং এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে ব্যবহার করা যাবে। সেই কারণেই তাঁদের ভাতা দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।

এখন সাক্ষরতা অভিযান বা উন্নয়নমূলক কাজের প্রচারে সরকার নিজেই নানা পরিকল্পনা করে। আশাকর্মীরা মূলত জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রচারের কাজ করে থাকেন। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা পুলিশের কাজ। ভাতা পেতে গেলে পুরোহিতদের এ সব কাজ করতে হবে বলে মন্ত্রিসভা প্রস্তাব নেওয়ায় নবান্নেই কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। যদিও প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘ইমামদের ভাতা দেওয়ার সময়ও পালস পোলিয়ো প্রচারে তাঁদের কাজে লাগানোর কথা বলা হয়েছিল। সরকার তো ইমাম বা পুরোহিতদের ভাতা দিতে পারে না। তাই সামাজিক দিকটি দেখিয়ে প্রকল্প তৈরি হচ্ছে।’’

Advertisement

প্রকল্পে বলা হয়েছে, ভাতা পেতে গেলে পুরোহিতদের সরকারি ছাপানো ফর্মে আবেদন করতে হবে। সেখানে অন্য কোনও পেনশন প্রকল্প বা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে তাঁরা যে সহায়তা পান না, তা জানাতে হবে। পাশাপাশি, ভাতাপ্রাপক পুরোহিতদের পাকা বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রেও দু’টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এক, সংশ্লিষ্ট পুরোহিতের নিজস্ব জমি থাকতে হবে, এবং দুই, তাঁর কোনও পাকা বাড়ি থাকা চলবে না।

আবেদনকারী পুরোহিতেরা পেনশন বা সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুবিধা পান কি না, তা যাচাই করার জন্য আধার নম্বর চেয়েছে সরকার। ভাতা পেতে গেলে তাঁদের এ রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। প্রশাসনিক সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজ্যের প্রতিটি মসজিদের এক জন ইমামকে মাসে আড়াই হাজার টাকা এবং এক জন মুয়াজ্জিনকে মাসে দেড় হাজার টাকা করে ভাতা দেয় সরকার। কিন্তু তাঁদের ভাতার আবেদনের ফর্মে আধার নম্বর দেওয়ার কথা বলা নেই। তাঁদের এ রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে, এমন শর্তও সরকার দেয়নি। তবে ফর্মে তাঁদের স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করতে হয়।

মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, আপাতত আট হাজার পুরোহিতকে এই ভাতা দেওয়া হবে। যদিও মন্ত্রিসভার প্রস্তাব বা সরকারি নথিতে কোনও সংখ্যার উল্লেখ নেই। সেখানে বলা হয়েছে, বিডিওদের কাছে আবেদন জমা পড়ার পরে তা যাচাই করা হবে। জেলার ক্ষেত্রে জেলাশাসক এবং কর্পোরেশন এলাকায় স্থানীয় কমিশনার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে ভাতা প্রাপকদের চূড়ান্ত তালিকা পাঠাবেন। দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যে পুরোহিতদের সংখ্যা কত, তা সরকারের জানা নেই। আবেদন আসতে শুরু করলে কিছুটা আভাস পাওয়া যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন