২০২২ সালের প্রাথমিকে টেটের সফল পরীক্ষার্থীদের নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে অন্য একটি ওয়েবসাইট থেকে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল টেটের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে। প্রশ্ন উঠেছিল, সরকারি অনুমোদন না-থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য অচেনা ওয়েবসাইটে ফাঁস হল? এ নিয়ে বিতর্কের আবহে সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানাল, ওই ওয়েবসাইটের নেপথ্যে যিনি রয়েছেন, তাঁকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কী ভাবে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই কাজ করা হয়েছিল, তা-ও অভিযোগপত্রে জানিয়েছে পর্ষদ।
চাকরিপ্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ্যে আসা নিয়ে বিতর্কের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পর্ষদ জানিয়ে দিল, যে দেড় লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়েছিল, তাঁদের তথ্য সুরক্ষিতই রয়েছে। কোনও তথ্য ফাঁস হয়নি। পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘আমাদের তথ্যভান্ডার থেকে কোনও তথ্য ফাঁস হয়নি। যাঁরা পর্ষদ এবং সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’’
প্রাথমিকে টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর টেট দিয়েছিলেন। ২০২৩-এর ১০ ফেব্রুয়ারি ফল বেরোয়। এর পরে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া থেকে নিয়োগ পর্ব কিছুই হয়নি। যাঁরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে শুধু নিজের নামটুকু দেখতে পেয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী তাঁরা তাঁদের টেট শংসাপত্র ডাউনলোডও করতে পারেন। তবে মোট কত জন পাশ করেছেন বা উত্তীর্ণদের তালিকা তাঁরা প্রাথমিক পর্ষদের ওয়েবসাইটে পাননি। কোন প্রার্থী কত নম্বর পেয়েছেন, সেই তথ্য প্রকাশের দাবিতে তাঁরা আদালতে মামলাও করেছেন। তা এখনও বিচারাধীন। তার মধ্যেই পরীক্ষার্থীদের নামের তালিকা এবং টেট পাশের শংসাপত্র ‘ফাঁস’ হয়ে যাওয়ায় বড়সড় দুর্নীতির আশঙ্কা করছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা।
পর্ষদের এক কর্তার দাবি, ‘‘পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর বেশ কয়েক মাস প্রার্থীরা পর্ষদের ওয়েবসাইট থেকে নিজস্ব তথ্য ডাউনলোড করতে পেরেছিলেন। সেখান থেকেই কিউআর কোড স্ক্যান করে জালিয়াতি করা হয়েছে। এতে অকৃতকার্য প্রার্থীদের তথ্য নেই।’’
২০২২ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী বিদেশ গাজি বলেন, ‘‘পর্ষদের পদক্ষেপ নিয়ে আপাতত সন্তুষ্ট। মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে পর্ষদ আমাদের জানিয়েছে। পর্ষদ সভাপতি আমাদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, সব তথ্য সুরক্ষিতই রয়েছে।’’