Drug Racket

Drug Racket: জেলে বসেই মাদকের ব্যবসা, কবুল দম্পতির

রাজ্য পুলিশের এসটিএফ বা স্পেশাল টাস্ক ফোর্স জানিয়েছে, ওই মাদক কেনার নির্দেশ জেলে বসে দেওয়ার পরে সম্প্রতি জেল থেকে জামিন পেয়েছে খইরুল।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২২ ০৮:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাঝেমধ্যে বন্দিশালা থেকে মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের ঘটনা প্রকাশ্যে এলে প্রশাসনের নড়নচড়ন টের পাওয়া যায়। তাতে সাময়িক ভাবে সেই অবৈধ ব্যবসায় ভাটার টান দেখা গেলেও তা যে নিঃশেষে বন্ধ হয় না, সম্প্রতি মালদহ স্টেশনে হেরোইন-সহ ধৃত এক দম্পতির স্বীকারোক্তিতে সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, জেলে বসে আন্তঃরাজ্য মাদক চক্র চালানো হচ্ছে অবাধে। তদন্তকারীদের জেরার মুখে ওই দম্পতি জানায়, তারা মুর্শিদাবাদের বহরমপুর জেলে বন্দি খইরুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর নির্দেশেই অসমের গুয়াহাটি থেকে ট্রেনে মাদক দ্রব্য এনেছিল মালদহে। এবং মুর্শিদাবাদেরই লালগোলায় সেই মাদক পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

রাজ্য পুলিশের এসটিএফ বা স্পেশাল টাস্ক ফোর্স জানিয়েছে, ওই মাদক কেনার নির্দেশ জেলে বসে দেওয়ার পরে সম্প্রতি জেল থেকে জামিন পেয়েছে খইরুল। তাকে ধরতে এসটিএফ আবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর শুরু করেছে। মাদক কারবার চালানোর অভিযোগেই খইরুলকে স্থানীয় থানা গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু তাতে তার কারবার মোটেই ধাক্কা খায়নি। শুধু বদলে যায় তার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণস্থল। জেলে বসেই মাদক সাম্রাজ্য চালাচ্ছিল সে।

এসটিএফ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে মালদহে গ্রেফতার করা হয় গোলাম মোস্তাফা এবং তার স্ত্রী রিয়া সাফিয়ানকে। ধৃত গোলাম ও রিয়ার বাড়ি মুর্শিদাবাদের লালগোলা এলাকায়। ওই দম্পতি একটি মিউজ়িক সিস্টেমের ভিতরে আড়াই কিলোগ্রাম হেরোইন নিয়ে যাচ্ছিল। সেই আটক মাদকের বাজারদর প্রায় ১২ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

গোলামকে জেরা করে এসটিএফ গোয়েন্দারা জানতে পারেন, খইরুল তার দাদা। সে কিছু দিন আগে পর্যন্ত বহরমপুর জেলে ছিল। গোলাম বছর কয়েক আগে লালগোলা ছেড়ে অসমের ধুবরিতে চলে যায়। সেখানে রিয়াকে বিয়ে করে বসবাস করতে শুরু করে। গোলামকে জেরা করার পরে গোয়েন্দারা জানান, ওই মাদক বাংলায় নিয়ে যেতে কিছু দিন আগে জেল থেকেই তাকে নির্দেশ দিয়েছিল খইরুল। সেই অনুযায়ী এক ব্যক্তি কিছু দিন আগে মণিপুর থেকে এসে তাকে ওই মাদক দিয়ে যায়। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে গুয়াহাটি থেকে একটি মিউজ়িক সিস্টেম কেনে তারা। তার ভিতরের যন্ত্রপাতি বার করে সেই জায়গায় মাদক ভরে দেওয়া হয়।

পুলিশ খোঁজ নিয়ে জেনেছে, খইরুল কিছু দিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। এক তদন্তকারী জানান, খইরুলকে মাদক কারবার চালানোর অভিযোগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, জেলে ঢুকেও সেখানে বসে ওই কারবার চালাচ্ছিল সে। এর আগে লালগোলায় মাদক তৈরির একটি কারখানার হদিস পেয়েছিল এসটিএফ। সেখান থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারাও জেরায় জানিয়েছিল, জেলে থাকা কয়েক জনের নির্দেশে মাদক তৈরি করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে তারা। বন্দিদশাতেও খইরুলদের মতো দুষ্কৃতীরা কারান্তরাল থেকে এ ভাবে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কী ভাবে, সেটা এক রহস্য। জেলের এক শ্রেণির কর্তা ও কর্মীর যোগসাজশ ছাড়া এই দুষ্কর্ম সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন উঠলেও ওই সব কারাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে এমন অবৈধ ব্যবসার মূলোচ্ছেদ করা হয় না কেন, সেটা আরও বড় ধাঁধা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন