Jyotipriya Mallick

‘জানি ইডি আমাকেও ডাকবে, যা নথি প্রয়োজন, দেব’, জানালেন জ্যোতিপ্রিয়-কন্যা প্রিয়দর্শিনী

প্রিয়দর্শিনী স্পষ্টই জানালেন, তাঁর কাছে ইডির তরফে যা যা নথি চাওয়া হবে, তিনি সমস্তই দাখিল করবেন। এ বিষয়ে তিনি ‘কনফিডেন্ট’ (আত্মবিশ্বাসী) বলেও জানিয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ২০:০৫
Share:

প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। — ফাইল চিত্র।

তিনি এক প্রকার নিশ্চিত, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁকেও ডাকবে। এবং ডাকলে তিনি যাবেনও। এবিপি আনন্দকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এমন কথাই বললেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত সপ্তাহে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। প্রিয়দর্শিনী স্পষ্টই জানালেন, তাঁর কাছে ইডির তরফে যা যা নথি চাওয়া হবে, তিনি সমস্তই দাখিল করবেন। এ বিষয়ে তিনি ‘কনফিডেন্ট’ (আত্মবিশ্বাসী) বলেও জানিয়েছেন। যদিও বেশির ভাগ প্রশ্নের জবাবই এড়িয়ে গিয়েছেন মন্ত্রী-কন্যা।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইডির হাতে গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয়। তার আগে প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চলে। আদালতের নির্দেশে এর পর শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। রবিবার দুপুরে সিজিও কমপ্লেক্সে জ্যোতিপ্রিয়ের কন্যা প্রিয়দর্শিনীকে যেতে দেখা গিয়েছিল। হাতে কিছু নথি ছিল। যদিও প্রিয়দর্শিনী জানাননি, কেন তিনি গিয়েছিলেন দফতরে। কিছু ক্ষণ পর সেখান থেকে বেরিয়েও যান। এ বার সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি, ইডি আমাকে ডাকবে। যা যা নথি চাইবে, দেব। আমি কনফিডেন্ট।’’

শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জ্যোতিপ্রিয়কে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বার করা হয়। তখন তিনি বলেন, “আমি চক্রান্তের শিকার। বিজেপি আমায় ফাঁসিয়েছে। মমতাদি-অভিষেক সব জানেন।” এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয় প্রিয়দর্শিনীকে। জিজ্ঞেস করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী কি সব জানেন? জবাবে প্রিয়দর্শিনী বলেন, ‘‘বাবা বলতে পারবেন। আমি সংগঠনের লোক নই। এটা রাজনীতির বিষয়। ওঁরা রাজনীতির লোক। আমি নই। ওঁরাই বলতে পারবেন।’’

Advertisement

রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। তাঁকে জেরা করেই জ্যোতিপ্রিয়ের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারেন ইডির আধিকারিকেরা। গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। ইডি সূত্রে খবর, এই বাকিবুরের সঙ্গে যোগ ছিল জ্যোতিপ্রিয়ের। একাংশ জানিয়েছেন, জ্যোতিপ্রিয়ের কনভয়েও দেখা গিয়েছে বাকিবুরকে। এই নিয়ে এবিপি আনন্দের প্রশ্নে প্রিয়দর্শিনী বলেন, ‘‘আমি তো কনভয়ে ঘুরতাম না। যাঁরা প্রত্যক্ষদর্শী, তাঁরা বলতে পারবেন।’’ তাঁর মা মণিদীপা মল্লিকের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নও এড়িয়ে গিয়েছেন প্রিয়দর্শিনী। তিনি বলেন, ‘‘এটা বলা সম্ভব নয়। মা বলতে পারবেন। মায়ের কাছে কাগজ রয়েছে। আর মা তো বাইরেই রয়েছেন।’’

অভিযোগ, গত কয়েক বছরে জ্যোতিপ্রিয়ের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তিও বেড়েছে। ২০২১ সালে জ্যোতিপ্রিয় নির্বাচনে মনোনয়ন পেশের সময় সম্পত্তির যে হিসেব দাখিল করেছিলেন, তাতে দেখা গিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে সাড়ে পাঁচ গুণ। আর তাঁর স্ত্রী মণিদীপার সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে ২৬ গুণ। ২০২১ সালের হলফনামা অনুযায়ী, মণিদীপার সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৩৮ লক্ষ ৯ হাজার ৭০৮ টাকা। ২০১১ সালে তা ছিল ৯ লক্ষ ১৪ হাজার ৯৩০ টাকা।

এর আগে গত সোমবার এবিপি আনন্দকে একটি সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় প্রিয়দর্শিনী দাবি করেছিলেন, শান্তিনিকেতনে রতনপল্লীতে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যে বাড়ি রয়েছে, তা তাঁর নামে নয়। তবে ওই বাড়িটি যে তাঁদের পরিবারেরই, তা স্বীকার করে নিয়েছেন। তখন বাবার গ্রেফতারি নিয়েও মুখ খুলতে চাননি তিনি। বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কিছু বলার সময় এখনও আসেনি। ইডি তো আগে গ্রেফতার করে, তার পর তদন্ত। সবটাই তদন্তসাপেক্ষ ব্যাপার। সময় এলে আমার যা বলার বলব।’’ ইডির সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছিলেন মন্ত্রীকন্যা। তখনও তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি এবং তাঁর বাবা দু’জনেরই তদন্তের মুখোমুখি হতে কোনও আপত্তি নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন