ছাইপুকুর নিয়ে এনটিপিসি’র অস্বস্তি কাটাতে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে এলেন মহকুমাশাসক। তাঁর মধ্যস্থতাতেই প্রায় দু’বছর ধরে চলা অচলাবস্থার সমাধানও মিলল ঘণ্টা দুয়েকের বৈঠকে।
বৃহস্পতিবার ফরাক্কায় তৃতীয় ছাইপুকুর নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং স্থানীয় প্রশাসনের বৈঠক ফলপ্রসু হওয়ায় হাঁফ ছাড়লেন এনটিপিসির কর্তারাও।
এ দিনের বৈঠকে জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসক কৃতিকা শর্মা এনটিপিসি’র কাছে প্রস্তাব দেন, এলাকা উন্নয়নের স্বার্থে রাস্তা-নালা কিংবা নিকাশি খাল তৈরির জন্য বরাদ্দ টাকা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জমা রাখলে, এলাকার মানুষের আস্থা পিরবে। সে টাকায় প্রশাসনই ওই উন্নয়নের কাজ করে দেবে।
সে প্রস্তাব এ দিন নির্ধিদায় মেনে নেয় এনটিপিসি কর্তপক্ষ। আর তাতেই সহজ হয়ে যায় পরিবেশ।
ফরাক্কা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার (মানব সম্পদ) অরুণ কুমার বলেন, “গ্রামবাসীদের দাবি মত নিশিন্দ্রায় সেতু, সড়ক, কিংবা নিকাশি গড়তে ১১ কোটি টাকা দেবে। শুরু করবে ছাইপুকুরের কাজও।”
এটিপিসি’র ৬টি ইউনিটে ২১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি বছর প্রায় ৩৬ লক্ষ মেট্রিক টন ছাই জমে ফরাক্কা প্ল্যান্টে। বর্তমানে ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য মালঞ্চা ও নিশিন্দ্রায় যে দুটি ছাইপুকুর রয়েছে গত তিরিশ বছর ধরে চলা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জমা ছাইয়ে তা প্রায় উপচে পড়ার মুখে। কিন্তু, প্রায় দু বছর ধরে চেষ্টা করেও স্থানীয় গ্রামবাসীদের বাধায় নিশিন্দ্রায় তৃতীয় ছাইপুকুরটি তৈরি করা যায়নি।
এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় এনটিপিসি। তারপরেই স্থানীয় গ্রামবাসী, সমস্ত রাজনৈতিক দল ও এনটিপিসির কর্তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার ফরাক্কার গঙ্গাভবনে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসে, সেখানেই জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসকের ওই প্রস্তাব।
কৃতিকা বলেন, “তৃতীয় ছাই গাদা নির্মাণে অচলাবস্থা কেটে যাওয়ায় সকলেই খুশি। ঠিক হয়েছে সব কাজই আর্থিক দায় নেবে এনটিপিসি। কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের কাছে সে টাকা জমা রাখবেন। জেলা প্রশাসন নিজেই উদ্যোগ নেবেন সে সব নির্মাণ কাজে। ছাই দূষণ রোধ ও সবুজায়ন সহ এলাকার অন্যান্য উন্নয়নের কাজ করবেন এনটিপিসি।”
ছাই নিয়ে নাজেহাল এনটিপিসি’র ফরাক্কা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাই যে কোনো সময়ে তার বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ফরাক্কায়। বৈঠক শেষে এ দিন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এগজিতিউটিভ ডাইরেক্টর অরবিন্দ কুমার সিনহা জানান, অতি দ্রুত তৃতীয় ছাইপুকুর না তৈরি করা গেলে ফরাক্কায় বিদ্যুৎ উৎপাদন থমকে যাবে। তবে জট কাটায় সে সম্ভাবনা অবশ্য কমেছে।