কেন্দ্রের আর্জি উড়িয়ে ধর্মঘট প্রতিরক্ষা শিল্পে

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে জট কাটানোর জন্য দিল্লিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় শ্রম কমিশনার এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলিকে নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫৩
Share:

দমদমে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতেও ধর্মঘট সর্বাত্মক বলে দাবি শ্রমিক ইউনিয়নের।—ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেই প্রতিরক্ষা উৎপাদন স্তব্ধ হয়ে রয়েছে কর্মীদের ধর্মঘটে। অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলিকে কর্পোরেটের হাতে তুলে দিয়ে ধীরে ধীরে বিলগ্নি ও বেসরকারিকরণের পথে এগোতে চাইছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার, এই অভিযোগে মাসভর ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রতিরক্ষা শিল্পের তিনটি প্রধান শ্রমিক ইউনিয়ন। সেই ধর্মঘটেরই তৃতীয় দিন ছিল বৃহস্পতিবার। ধর্মঘটকারীদের দাবি, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরির ৯৩% কর্মী যোগ দিয়েছেন প্রতিবাদে। এ রাজ্যে কাশীপুর, দমদম ও ইছাপুরের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিতেও ধর্মঘট সর্বাত্মক বলে তাঁদের দাবি।

Advertisement

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে জট কাটানোর জন্য দিল্লিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় শ্রম কমিশনার এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলিকে নিয়ে। তার আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে পিআইবি মারফত জানানো হয়েছিল, প্রতিরক্ষা শিল্পে বেসরকারিকরণের কোনও পরিকল্পনা নেই। কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসলে বেসরকারিকরণের পথেই এগোবে কেন্দ্র। তাতে যেমন কর্মী ছাঁটাই হবে, তার চেয়েও বড় কথা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের গোপনীয়তা নষ্ট হবে। বিতর্ক মিটছে না দেখে কেন্দ্রীয় শ্রম কমিশনার প্রস্তাব দেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও শ্রমিক ফেডারেশনগুলির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়া উচিত। কিন্তু কর্পোরেটের পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের লিখিত আশ্বাস না পেলে তারা অন্য কোনও প্রস্তাব মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে তিনটি প্রধান শ্রমিক ফেডারেশন এআইডিইএফ, আইএনডিডব্লিউএফ এবং বিপিএমএস।

বাংলায় তৃণমূল, বাম এবং কংগ্রেস সমর্থন জানিয়েছে ধর্মঘটকে। গাঁধীমূর্তির নীচে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের লাগাতার অবস্থান-মঞ্চ থেকে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলিকে কর্পোরেটের হাতে দেওয়ার বিরোধিতা করা হয়েছে। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী ইছাপুর অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরির সামনে ধর্না-মঞ্চে গিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আরএসএসের কাছে দেশপ্রেমের শিক্ষা নেওয়ার কিছু নেই। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য যাঁরা লড়ছেন, তাঁরাই দেশপ্রেমী।’’ বামফ্রন্ট ও অন্যান্য সহযোগী বাম দলগুলির তরফে ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছেন বিমান বসু। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, ‘‘প্রতিরক্ষা শিল্পের মতো গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে ভাবে পুঁজিপতিদের হাতে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদে নেমেছে ‘প্রতিরক্ষা শিল্প বাঁচাও-যৌথ সংগ্রাম কমিটি’। আমরা প্রতিরক্ষার সর্বস্তরের কর্মচারীদের লড়াইয়ে সম্পূর্ণ ভাবে পাশে আছি।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন