রাফাল দুর্নীতি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। —ফাইল চিত্র।
জেলায় জেলায় ২৩ দিনের পদযাত্রায় উৎসাহ দেখে মনে বল পেয়েছিলেন বাম নেতারা। কিন্তু সেই ‘অধিকার যাত্রা’র সমাপ্তি উপলক্ষে কলকাতায় সমাবেশ জমাতে পারলেন না তাঁরা। এর আগে পদযাত্রার কর্মসূচি শেষ হয়েছিল মিছিলেই। কিন্তু এ বার শহিদ মিনার ময়দানে কেন্দ্রীয় সমাবেশ করতে গিয়ে লোক টানতে পারল না বামপন্থী ও অন্যান্য ১১৭টি গণসংগঠনে যৌথ মঞ্চ বিপিএমও। ঠা ঠা রোদে ওই সমাবেশ থেকেই বুধবার অবশ্য রাফাল দুর্নীতি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। এত দিন যা নিয়ে টানা সরব ছিল রাহুল গাঁধীর কংগ্রেস।
প্রথমে বামেদের পরিকল্পনা ছিল, চার প্রান্ত থেকে চারটি মিছিল নিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে জমায়েত করা হবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বদলে এ দিন শুধু যাদবপুর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি মিছিল শহিদ মিনারে আসে। উত্তর ২৪ পরগনার একটি মিছিলকেও সভাস্থলে দেখা গিয়েছে তবে নিতান্তই দায়সারা ভাবে। সভায় উপস্থিত বাম কর্মী-সমর্থকদের একাংশের বক্তব্য, জেলায় তিন-চার দিন করে পদযাত্রা করার পরে পুজোর মুখে কলকাতায় সমাবেশে আসতে আগ্রহ দেখাননি অনেকেই। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যেরও উপলব্ধি, ‘‘শুধু মিছিল করে কর্মসূচি শেষ করলে এর চেয়ে বেশি দাগ কাটা যেত।’’ প্রখর রোদে দুপুরের জমায়েত এ দিন বড় ঘাসে ঢাকা শহিদ মিনারের মাঠের অর্ধেকও ভরাতে পারেনি!
রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশের পুলিশি অনুমতি বাতিল হলেও সংখ্যালঘু যুব ফে়ডারেশন বরং একই সময়ে চোখে পড়ার মতো লোক নিয়ে ধর্মতলা থেকে মেয়ো রোড পর্যন্ত মিছিল করেছে।
স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই সূর্যবাবু বিজেপি ও তৃণমূলকে নিশানা করেছেন ‘একই মুদ্রার দুই পিঠ’ বলে। সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘কুড়ি হাজার কোটি টাকার রাফাল দুর্নীতিতে প্রধানমন্ত্রীর নাম জড়িয়েছে। সরকারি সংস্থা হ্যালকে বাদ দিয়ে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির সব সীমাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে মোদীর সরকার।’’ রাফাল-প্রশ্নে কংগ্রেস ধারাবাহিক প্রচার চালিয়ে মোদী সরকারকে চাপে ফেলতে পেরেছে বলেই বাম নেতারা মনে করছেন। তাই তাঁরাও এখন ওই বিষয়ে মুখর হচ্ছেন। রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বিপিএমও-র আহ্বায়ক শ্যামল চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘উন্নয়ন কোথাও গুলি চালিয়ে মানুষ মেরে দিচ্ছে, কোথাও বোমা হয়ে ফেটে পড়ছে! এই পরিস্থিতি বদলাতে হবে।’’