বিক্ষোভ: ভাঙড়ের গ্রামে জমি আন্দোলনকারীরা। নিজস্ব চিত্র
রমজান মাস। বৃহস্পতিবার বিকেলে অন্য দিনের মতোই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মাছিভাঙা গ্রামে ইফতারের তোড়জোড় চলছিল। গ্রামের মোড়ের একটি চায়ের দোকানে টিভিতে হঠাৎ দেখানো শুরু হয়, ভুবনেশ্বরে হাসপাতালের সামনে থেকে ধরা পড়েছেন ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড বিরোধী জমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা অলীক চক্রবর্তী।
মুহূর্তের মধ্যে মাছিভাঙা, নতুনহাট, পদ্মপুকুর এলাকার ছবিটা বদলে যেতে থাকে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে মানুষের জটলা চোখে পড়ে। চাপা উত্তেজনা সর্বত্র। সন্ধের পরে অলীকের গ্রেফতারের প্রতিবাদে নতুনহাট থেকে ঢিবঢিবা পর্যন্ত মিছিল করে জমি কমিটি। যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে লাউহাটি-হাড়োয়া রোড়ের সব যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
জমি কমিটির সদস্য মির্জা হাসান বলেন, ‘‘অলীক চক্রবর্তী চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। সে সময়ে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে বলে সংবাদমাধ্যম থেকে খবর পাই। যেহেতু রমজান মাস চলছে, তাই সকলে তা নিয়ে ব্যস্ত। আমরা সব কিছু আলোচনার পরে ঠিক করব।’’ তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ অলীকদাকে গ্রেফতার করার পরে কী ভাবে রাখবে, সঠিক চিকিৎসা হবে কিনা, সে সব নিয়ে আমরা চিন্তায় আছি। এমনকী, তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কাও করছি।’’
এক আন্দোলনকারী কথায়, ‘‘হঠাৎ করে যেন সব ওলটপালট হয়ে গেল। অলীকদা সব কিছু ঠান্ডা মাথায় সামলাতেন। এখন কে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে? এরপরে আন্দোলনের কী হবে বুঝতে পারছি না।’’
তবে এ সবের মধ্যেও হাল ছাড়তে চান না বেশির ভাগ মানুষ। এর আগে ইউএপিএ মামলায় ধরা পড়েও শর্মিষ্ঠা চৌধুরীরা কয়েকজন হাইকোর্টে জামিন পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে অলীককেও পুলিশ বেশি দিন আটকে রাখতে পারবেন না বলেই তাঁদের বিশ্বাস।