শ্যামবাজারে রাতভর সমাবেশ। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে শুক্রবার জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল হয় কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত। এর পর শ্যামবাজারে রাতভর সমাবেশে যোগ দেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের আক্ষেপ, “এক বছর হয়ে গেলেও এখনও সুবিচার পাওয়া গেল না।” সেই সঙ্গে তাঁদের বিশ্বাস, এক দিন তাঁরা বিচার ছিনিয়ে আনবেনই।
মিছিলে নির্যাতিতার বাবা বলেন, “গত বছর ৯ অগস্ট আমাদের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। আমার মেয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া ছিল। কিন্তু তাঁর উপর যে অত্যাচার হয়েছে তা কোনও দিনই আমরা ভুলতে পারব না। আমার মেয়ে ন্যায়বিচার পায়নি। এ বিষয়ে আমরা এখনও পর্যন্ত পুলিশ-প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও সহযোগিতা পায়নি। এক বছর হয়ে গেলেও সিবিআই আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি।”
নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারেরা যারা আমার ছেলেমেয়ের মতোই তারা আমার সঙ্গে আছে। তবে তাদের অনেকের মধ্যেই হুমকি সংস্কৃতি রয়েছে। অনেকেই সুযোগসন্ধানী। তাদেরকেও বাছাই করে রাখতে হবে। মেয়ের জন্য যারা লড়াই করছে, তাদের আলাদা করে ধন্যবাদ আমি জানাব না। আমার বিশ্বাস, তারা ভবিষ্যতেও আমাদের সঙ্গে এই লড়াইয়ে থাকবে।”
শ্যামবাজারে প্রতিবাদ মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
এর পর নির্যাতিতার মা মঞ্চে উঠে বলেন, “আজও প্রতি রাতে মেয়ের কান্না শুনতে পাই।” তিনি বলেন, “যতই ব্যারিকেড থাক আগামী কাল নবান্ন অভিযান হবেই। আমাদের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “অনেকেই ভাবছেন আমরা বিচার পেয়ে গিয়েছি। তবে, আদৌ তা হয়নি। কেউ কেউ প্রচার করছে, রাজনীতিতে নামার জন্য বা ভোটে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে আমরা প্রতিবাদ করছি। কিন্তু এটুকু বলতে পারি, রাজনীতিতে আসার কোনও পরিকল্পনাই আমাদের নেই। আমরা শুধু মেয়ের বিচার চাই।”
নির্যাতিতার মায়ের প্রশ্ন, কেন আন্দোলনে তাঁর মেয়ের বিভাগের সহপাঠীরা নেই? তাঁর আরও প্রশ্ন, মেয়ের সঙ্গে আরও কী কী ঘটেছে তা কি সত্যিই ওই হাসপাতালের আর কেউই জানতেন না? একই সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, “আমার মেয়ে এই পৃথিবীতে না থাকলেও, তাকে কোনও দিনও আমরা ভুলতে দেব না। তার নাম যেন না মুছে যায় তার আপ্রাণ চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাব।”
আরজি কর-কাণ্ডের এক বছর। আবারও আন্দোলনের বার্তা দিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। নির্যাতিতার স্মরণে আরজি করে স্থাপিত ‘ক্রাই অফ্ দ্য আওয়ার’ মূর্তির অনুকরণে তৈরি প্রতিমূর্তির সামনে মোমবাতি প্রজ্বলন করেন তাঁরা। মেডিক্যাল কলেজের সুপারের অফিসের সামনে লাগানো হয় বেশ কিছু ব্যানারও। তাতে লেখা, ‘বিচার যখন প্রহসন, লড়াই তখন আমরণ’, ‘ছিনিয়ে নেব ন্যায় বিচার, একটি রাখির অঙ্গীকার’-সহ বিভিন্ন স্লোগান। রাত জেগে এই কর্মসূচির পাশাপাশি ৯ অগস্ট নির্যাতিতার স্মৃতিতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা মোমবাতি প্রজ্বলন করেন। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা।
আরজি করের নির্যাতিতার জন্য বিচার চেয়ে কোচবিহারে মিছিল করল ‘সিটিজেন্স ফর জাস্টিস’। সাগরদিঘি স্কোয়্যারের ক্ষুদিরাম মূর্তির সামনে থেকে মশাল মিছিল, নাটক, কবিতা, প্রতিবাদী সঙ্গীত এবং পথ-অঙ্কনের মাধ্যমে শুক্রবার রাত জাগা কর্মসূচি শুরু হয়।
প্রতিবাদ মিছিল কোচবিহারে। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্যোগে দেওয়াল লিখে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হল।
দেওয়াল লিখে প্রতিবাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। —নিজস্ব চিত্র।
দেওয়াল লিখে প্রতিবাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে আবার পথে নামলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুক্রবার রাত ৯টায় কলেজ স্ট্রিট থেকে তাঁদের মশাল মিছিল শুরু হয়। গন্তব্য শ্যামবাজার।
জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল। ছবি: ভিডিয়ো।
জুনিয়র ডাক্তারদের মশাল মিছিল। ছবি: সংগৃহীত।
আরজি করের নির্যাতিতার জন্য বিচার চেয়ে মেদিনীপুর শহরে যৌথ মিছিল করল বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল করেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই।
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার এক বছর পার। সেই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ৯ অগস্ট, শনিবার কলকাতার নানা জায়গায় মিছিল-বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন আরজি করের নির্যাতিতার মা-বাবা। তাতে সরাসরি সমর্থন করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তথা গোটা বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি, কালীঘাট অভিযানেরও ডাক দিয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তার আগে ৮ অগস্ট, শুক্রবারও কলকাতা ও তার গণ্ডি ছাড়িয়ে জায়গায় জায়গায় প্রতিবাদ-মিছিল হয়েছে।