ঢাকের শব্দে গমগম করছিল মাঠ, তবুও মিটল না আশা

সকাল থেকেই উৎসাহী মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে চোখে দেখার জন্য ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে।

Advertisement

বিপ্লব ভট্টাচার্য

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০১:২২
Share:

মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে ব্যারিকেডের ওপারে আমজনতা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন। তার জন্য আগে থেকেই তোড়জোড় চলছিল। এ বার তাঁদের জন্য নতুন কিছু নিয়ে আসে কি না, তা নিয়ে উৎসাহ বাড়ছিল মানুষের মধ্যে।

Advertisement

সোমবার দুর্গাপুরের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন। ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনে হেলিকপ্টারে নেমে তিনি গাড়িতে করে চলে যান সৃজনীতে। সকাল থেকেই উৎসাহী মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে চোখে দেখার জন্য ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে। দুপুর ১২টা নাগাদ ভিড় অনেকটাই বেড়ে যায়। ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনের সামনের রাস্তার দু’পাশে বাঁশের ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় পুলিশের তরফে। সেই ব্যারিকেডের দু’ধারে সাধারণ মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য।

দলীয় পতাকা নিয়ে বহু মানুষ আসেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে দুর্গাপুরে স্বাগত জানানোর জন্য তৈরি ছিলেন ঢাকিরাও। দুর্গাপুরের বীরভানপুর এলাকা থেকে এসেছিলেন তুহিন মণ্ডল, রমেশ বাউরি, অশোক বাদ্যকররা। তাঁরা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আসছেন আমাদের এলাকায়। তাঁর জন্য আমরা প্রস্তুত।’’ মাঝেমধ্যেই ঢাকের শব্দে চারদিক গমগম করে উঠছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে ফুল দেওয়ার জন্যও বেশ কয়েকজন পুষ্পস্তবক নিয়ে এসেছিলেন। তেমনই একজন রেশমী মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি নিজের হাতে ফুল দিতে চাই দিদিকে।’’ যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁর সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। পুলিশি ঘেরাটোপ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে সেই স্তবক আর দিতে পারেননি তাঁরা।

Advertisement

এ দিন ভিড় সামলাতে মাঠে নেমে পড়েন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন ও কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। সঠিক জায়গায় আগত সমর্থকদের দিক নির্দেশ করছিলেন দু’জনেই। বিভিন্ন দিক থেকে মানুষ আসছিলেন ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনের দিকে। সেই ভিড় পুলিশের পাশাপাশি ওই দুই নেতাও খুব দক্ষতার সঙ্গে করছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা উপলক্ষে নিরাপত্তা আটোসাঁটো করা হয়েছিল সিটি সেন্টার চত্বর জুড়ে। সৃজনী প্রেক্ষাগৃহ সংলগ্ন রাস্তার দু’পাশে বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। কোনও গাড়ি বিনা অনুমতিতে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় সকাল থেকেই। ডিভিসি মোড় থেকে সিটি সেন্টার যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয় এ দিন। সিটি সেন্টারগামী গাড়িগুলিকে এমএএএমসি বা অন্য বিকল্প পথে যাতায়াত করতে হয়। পুলিশের তরফে বেশ কয়েকটি জায়গায় চেকপোস্টও তৈরি করা হয়। ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গন থেকে রাস্তার দু’পাশে পুলিশ কর্মীরা মোতায়েন ছিলেন। নিরাপত্তা এতটাই কড়াকড়ি ছিল যে, দুর্গাপুর পুরসভার কাউন্সিলরদেরও সৃজনীর সামনের রাস্তায় আটকে দেয় পুলিশ। তা দেখে এক সাধারণ মানুষের সহাস্য উক্তি, ‘‘জনপ্রতিনিধিরাই যদি আটকে পড়েন, তা হলে আমরা আর কী করে যাব!’’

এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ ভগৎ সিং ক্রীড়াঙ্গনে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামে। সেখান থেকে উপস্থিত সাধারণ মানুষ, দলীয় কর্মীদের দিকে হাত দেখিয়ে সোজা চলে যান সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে। এ দিন ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে একদল মহিলা এসেছিলেন কিছু সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলে। কিন্তু সেই সুযোগ আর হয়নি।

সব শেষে আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হল তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন