—ফাইল চিত্র।
পুজো উদ্যোক্তাদের সরকারি অনুদানে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি কলকাতা হাইকোর্ট। আজ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর বিরুদ্ধে আর্জি শুনতে রাজি হলেন। তা-ও একেবারে জরুরি ভিত্তিতে। শুক্রবারেই বিচারপতি মদন বি লোকুরের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে।
রাজ্যের ২৮ হাজার নথিভুক্ত ক্লাবের প্রত্যেককে দুর্গাপুজোর জন্য ১০ হাজার টাকা হিসেবে মোট ২৮ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হলেও বুধবারই হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।
বৃহস্পতিবার সকালেই সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে হাজির হন আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিক। জনস্বার্থ মামলাকারীদের হয়ে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শুভাশিস বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সরকারি অর্থ খরচ করছে। এটি ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতের সংবিধান-বিরোধী।’’ জরুরি ভিত্তিতে শুনানিরও আর্জি জানান তিনি। প্রধান বিচারপতি এই আর্জি মেনে নিয়ে জানান, শুক্রবারই উপযুক্ত বেঞ্চে শুনানি হবে। প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরেই রঞ্জন গগৈ নির্দেশ জারি করেছেন, তিনি বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি শুনবেন না। কারও ফাঁসি হতে চলেছে, কাউকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হবে— এই ধরনের জরুরি প্রযোজন ছাড়া দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো যাবে না। আজও প্রধান বিচারপতি বলেছেন, দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো আইনজীবীদের বিশেষ অধিকার। অপ্রয়োজনীয় মামলার উল্লেখ করলে তাঁরা সেই বিশেষ অধিকারই হারাবেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আপনারা কি চান সেই বিশেষ অধিকার হাতছাড়া হোক?’’ সোমবার থেকেই শীর্ষ আদালতে দশেরা-র ছুটি শুরু হচ্ছে। ফলে শুক্রবারই শুনানি করতে হত।
হাইকোর্টে মামলাটি করেছিলেন দুর্গাপুরের যুক্তিবাদী আন্দোলনের কর্মী সৌরভ দত্ত ও কলকাতার আইনজীবী দ্যুতিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তর বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। রাজ্যের যুক্তি ছিল, জনগণের জন্য কত টাকা কী ভাবে খরচ হবে, তা রাজ্য আইনসভার এক্তিয়ারভুক্ত। করদাতারা এই নিয়ে আপত্তি তুলতে পারেন না। হাইকোর্ট কার্যত সেই যুক্তিই মেনে নিয়েছে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সৌরভ-দ্যুতিমান সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন।