হাসপাতালের নিরাপত্তায় সিসিটিভি-র উপর গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু পুরুলিয়া জেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালেই সিসিটিভি প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য। ওয়ার্ডের ভিতরে সিসিটিভি থাকলেও সবগুলই বিকল। যে ক’টি সিসিটিভি সদ্য লাগানো হয়েছে তাও হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পথে নজরদারির জন্য রয়েছে। কিন্তু তাও পুরো এলাকা নজরে রাখতে পারছে না।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শিশু চুরি কাণ্ডের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে বৈঠক করে হাসপাতালের নিরাপত্তা কী ভাবে বাড়ানো যায়, সেই রূপরেখা তৈরি করতে তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন। ওই কমিটির অন্যতম সদস্য রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ জানিয়েছেন, সিসিটিভি ব্লকস্তরের স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত লাগানো হবে। সিসিটিভি যাতে ঠিক মতো কাজ করে, সে জন্য রক্ষণাবেক্ষণেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
অথচ পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বারান্দায় লাগানো ১৬টি সিসিটিভি বেশ কিছুদিন ধরেই বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে ওয়ার্ডের ভিতরে কোনও গোলমাল হলে সে ছবি ধরে রাখা যাবে না। যেমনটা মাসখানেক আগে হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টারের অফিসের সামনে এক ডাক্তারকে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে এক বিধায়কের বিরুদ্ধে। তখনই সামনে আসে শুধু ওই এলাকার সিসিটিভিই নয়, হাসপাতালের সমস্ত বারান্দায় বসানো ১৬টা সিসিটিভি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে।
যে সংস্থা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল, তাদের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে আর কোনও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার খাতিয়েও সিসিটিভি-র প্রয়োজন।
ওই ঘটনার পরে হাসপাতালে ১৬টি সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। হাসপাতাল সুপার শিবাশিস দাস বলেন, ‘‘নতুন ১৬টি সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। এগুলির বেশির ভাগই হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তায় নজর রাখছে। তবে ওই চিকিৎসক হেনস্তার মামলার সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় পুরনো সিসিটিভি মেরামতির জন্য পুলিশের অনুমতির প্রয়োজন।’’ যদিও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, নতুন সিসিটিভি লাগানোর পরেও হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দু’টি পথে ক্যামেরার নজরদারি নেই।
বাস্তবিক ওই ১৬টি সিসিটিভি যে যথেষ্ট নয়, তা মানছেন হাসপাতালের কর্তাদের একাংশও। এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা হিসেব করে দেখেছি, ৫২টি সিসিটিভি বসানো গেলে পুরো হাসপাতালের উপর নজর রাখা যাবে। সেখানে মোটে ১৬ ক্যামেরা কী করবে?’’