একই ফেরিঘাট দু’বার নিলাম ডাকায় বিতর্ক

ময়ূরেশ্বরের কুণ্ডলা পঞ্চায়েতের ভাবঘাটি ও সাঁইথিয়ার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের বোলসুন্ডা কলোনির মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে ময়ূরাক্ষী নদী।

Advertisement

অর্ঘ্য ঘোষ 

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৫
Share:

দুই বিজ্ঞপ্তি। সাঁইথিয়া (বাঁ দিকে) ও ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির। নিজস্ব চিত্র

একই নদীতে একই জায়গায় ফেরিঘাটের নিলাম ডাকল দুই পঞ্চায়েত সমিতি। এর ফলে নিলামে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে চরম বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। সাঁইথিয়া এবং ময়ূরেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার এই ঘটনায় প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবও প্রকট হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। তবে দ্রুত বিভ্রান্তি মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী।

Advertisement

ময়ূরেশ্বরের কুণ্ডলা পঞ্চায়েতের ভাবঘাটি ও সাঁইথিয়ার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের বোলসুন্ডা কলোনির মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে ময়ূরাক্ষী নদী। ব্লক প্রশাসন তথা পঞ্চায়েত পক্ষ থেকে ওই এলাকায় ভাড়ার বিনিময়ে যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরিঘাট নীলাম ডাকা হয়। গত বছর ময়ূরেশ্বর ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই নিলাম ডাকা হয়েছিল। এ বারও ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের পক্ষে থেকে এক বছরের জন্য বিডিও অর্ণবপ্রসাদ মান্নার স্বাক্ষরিত দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ওই দরপত্রে এক বছরের জন্য সর্বনিম্ন ১৯ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা দর ধার্য করা হয়েছে। নিলামে অংশ গ্রহণের জন্য ২৯ অক্টোবরের মধ্যে ৬০ হাজার টাকার ড্রাফট-সহ দরপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে নিলামে অংশগ্রহণে ইচ্ছুকদের। ৫ ডিসেম্বর সেই দরপত্র খুলে সর্বোচ্চ দরদাতাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা।

একই ভাবে ওই ফেরিঘাটেই সাঁইথিয়া ব্লকের বিডিও স্বাতী দত্ত মুখোপাধ্যায়ের স্বাক্ষরিত দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে এক বছরের জন্য সর্বনিম্ন ইজারা ধার্য হয়েছে ২০ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা। ওই দরপত্রে বলা হয়েছে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে নিলামে অংশগ্রহণের জন্য ৭ হাজার টাকার ড্রাফট-সহ দরপত্র জমা দিতে হবে। ৩ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেওয়া কথা।

Advertisement

এমন ঘটনায় দুই ব্লকেই নিলামে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের মধ্যে চরম বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা কোথায় দরপত্র জমা দেবেন ভেবে পাচ্ছেন না। সাঁইথিয়ার অটুয়ার বিধান মণ্ডল, ময়ূরেশ্বরের নারায়ণঘটির ভবসিন্ধু মণ্ডলরা বলেন, ‘‘দুই পঞ্চায়েত সমিতিই দাবি করছে তারাই নিলাম ডাকার হকদার। এই অবস্থায় আমরা কোথায় দরপত্র জমা দেব ভেবে পাচ্ছি না।’’ প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেরও অভিযোগ উঠেছে। নিলামে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দুটি পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে থেকে জেলা পরিষদ, জেলাশাসক-সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত প্রশাসনিক দফতরে নিলামের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কথায়, ‘‘সময়ে সজাগ হলে আমাদের এমন বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হতো না। একে সমন্বয়ের অভাব ছাড়া কীই বা বলা যায়!’’

ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের বিডিও অর্ণবপ্রসাদ মান্নাকে ফোন করে এবং মেসেজ পাঠিয়েও প্রতিক্রিয়া মেলে নি। তবে পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি দীপালি কোনাই বলেন, ‘‘আমরাই ওই ফেরিঘাটের টেন্ডার আহ্বান করে থাকি। কিন্তু এ বার সাঁইথিয়া পঞ্চায়েত সমিতিও টেন্ডার আহ্বান করেছে বলে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের সঙ্গে কথা বলব।’’ সাঁইথিয়ার বিডিও স্বাতী দত্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে পঞ্চায়েত সমিতির সিদ্ধান্তেই ওই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কারও কোনও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন।’’

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝির কারণেই ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ঠিক হয়েছিল এক বছর করে পালাক্রমে দুই পঞ্চায়েত সমিতি ওই ফেরিঘাটের টেন্ডারের ডাক দেবে। সেই হিসেবে এ বার সাঁইথিয়া পঞ্চায়েত সমিতিরই নিলাম আহ্বান করার কথা। উভয় পক্ষকে নিয়ে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন