Police

রূপসপুর-কাণ্ডে ওসি ক্লোজ

মঙ্গলবার সকালে রূপসপুর গ্রামের বাড়ি থেকে শৌভিক গড়াই নামে বছরে একুশের এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরই অশান্ত হয়ে উঠেছিল গোটা গ্রাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লোকপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৫:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি

রূপসপুর গ্রামে এক যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শুধু অভিযুক্তদের গ্রেফতার করাই নয়, কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ‘শাস্তি’ দেওয়া হল লোকপুর থানার দুই পুলিশ আধিকারিককেও। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বুধবার বলেন, ‘‘লোকপুর থানার ওসি রমেশ মণ্ডলকে ক্লোজ করা হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে ওই থানার সেকেন্ড অফিসার সরোজ ঘোষকে। দু’জনের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে রূপসপুর গ্রামের বাড়ি থেকে শৌভিক গড়াই নামে বছরে একুশের এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরই অশান্ত হয়ে উঠেছিল গোটা গ্রাম। অভিযোগ ছিল, নিরীহ ওই যুবকের প্রতিবেশী এক মিস্টান্ন ব্যবসায়ী তাঁকে চোর অপবাদ দেওয়ায় এবং কোনও তদন্ত ছাড়াই পুলিশ ওই যুবককে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে হেনস্থা করে। সেই অপমানে শৌভিক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীর দাবি। পুলিশ গ্রামে গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর মেজো ছেলের এ ভাবে মৃত্যুর জন্য ব্যবসায়ী শিবারণ গড়াই, তাঁর ছেলে সজল এবং ভাইপো কাজলের বিরুদ্ধে লোকপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন শৌভিকের বাবা নাড়ুগোপাল গড়াই। তিনি বলেন, ‘‘কাজের খোঁজে আগে ভিন্ রাজ্যে ছিল আমার ছেলে। পরে বক্রেশ্বরের একটি আশ্রমে থাকত। লকডাউনের মধ্যে মাস খানেক আগে বাড়ি ফিরেছিল।’’ তাঁর দাবি, ঘটনার দিন তিনেক আগে ওই মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী তাঁর দোকান থেকে টাকা ও বাড়ি থেকে জিনিসপত্র চুরির জন্য শৌভিককে অভিযুক্ত করেন। থানায় শৌভিকের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেন।

Advertisement

নাডু়গোপালবাবু বলেন, ‘‘শৌভিক নিরপরাধ। অথচ পুলিশ রবিবার ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। আবার সোমবার ছেড়ে দেওয়ার পরে ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেসলে, ভাইপো বাড়িতে এসে শৌভিককে মারধর করে।’’ তাঁর দাবি, সেই লজ্জা ও গ্লানিতেই শৌভিক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই রাতেই।

শৌভিকের দেহ মিলতেই ক্ষোভের আগুন ছড়ায় এলাকায়। পরিস্থিতি বুঝে মঙ্গলবার ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর ভাইপোকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ছেলে সজল পলাতক। বুধবার ধৃতদের দুবরাজপুর আদালতে তোলা হয়। মামলার সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রেপ্রসাদ দে জানান, বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বিবেক তামাং অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতের আবেদন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজত মঞ্জুর করেন।

অন্য দিকে, পুলিশ সুপারের নির্দেশে লোকপুর থানার ভূমিকা নিয়ে তদন্তে নামেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) শিবপ্রসাদ পাত্র। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগ পেলেও ধৃতের বিরুদ্ধে কোনও মামলা শুরু না করেই মারধর করে শৌভিককে কেন তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, এমনকি ২৪ ঘণ্টা আটকে রেখে ছেড়েই বা দেওয়া হল কেন—এ সব প্রশ্নের নির্দিষ্ট কারণ দেখাতে পারেন ওসি এবং সেকেন্ড অফিসার। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন