পুরুলিয়ায় ফিরছেন ২৪ শ্রমিক

ক্যাম্পে আট দিন কাটিয়ে জেলার পথে

শ্রমিকেরা জানান, টানা তিন দিন, তিন রাত হেঁটে ওড়িশা সীমানায় পৌঁছন। মালকানগিরি জেলার পুলিশ তাঁদের আটকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০২:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি

তেলঙ্গানা থেকে প্রায় দু’শো কিলোমিটার হেঁটে আসা পুরুলিয়ার ২৪ জন পরিযায়ী শ্রমিককে ওড়িশা সীমানায় আটকে দিয়েছিল পুলিশ। আট দিন ওড়িশা পুলিশের ক্যাম্পে কাটিয়ে পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতোর হস্তক্ষেপে বাসে করে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা। ওই ২৪ জন মূলত পুরুলিয়া মফস্সল, পাড়া ও হুড়া থানা এলাকার বাসিন্দা। তেলঙ্গানায় দিনমজুরি করতেন।

Advertisement

ওই শ্রমিকদের মধ্যে পুরুলিয়া মফস্সল থানার মালথোড় গ্রামের গোরাচাঁদ রজক, কানাই রাজোয়াড়, স্বপন রাজোয়াড়েরা বলেন, ‘‘আমরা তেলঙ্গানার খম্মাম জেলার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতাম। ফেব্রুয়ারিতে গিয়েছিলাম। মার্চে লকডাউন হয়ে যায়।’’ তাঁদের অভিযোগ, ঠিকাদার কাজের পারিশ্রমিক দিচ্ছিলেন না। এ দিকে ‘লকডাউন’ বাড়তে থাকে। মরিয়া হয়ে ১৫ মে পায়ে হেঁটে রওনা হন।

ওই শ্রমিকেরা জানান, টানা তিন দিন, তিন রাত হেঁটে ওড়িশা সীমানায় পৌঁছন। মালকানগিরি জেলার পুলিশ তাঁদের আটকায়। গোরাচাঁদ বলেন, ‘‘পুলিশ জানিয়েছিল, হেঁটে যাওয়া যাবে না। আমরা বাস ভাড়া করলে, অনুমতির ব্যবস্থা তারাই করে দেবে। সেটা করার মতো টাকা আমাদের কাছে ছিল না।’’

Advertisement

গোরাচাঁদ, কানাই ও স্বপনের কথায়, ‘‘জেলা পরিষদের নম্বরে মেসেজ পাঠালাম, কিন্তু সুরাহা হল না। ভিডিয়ো করে ফেসবুকে পোস্ট করেও লাভ হয়নি। তার পরে বিধায়ক নেপাল মাহাতোর নম্বর পেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করি।’’

নেপালবাবু বলেন, ‘‘জেলার প্রচুর মানুষ নানা দিকে আটকে রয়েছেন। ওই শ্রমিকেরা বলছেন, তাঁরা নানা ভাবে বিভিন্ন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কোন সাড়া মেলেনি। নম্বরগুলি যখন দেওয়া হয়েছে, শ্রমিকেরা তো যোগোযোগ করবেনই। দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের বিষয়টি দেখা দরকার।’’

জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ হলধর মাহাতো বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যে নাম আসছে, আমরা সেটা নবান্নে পাঠিয়ে দিচ্ছি। ওই শ্রমিকেরা আমাদের নাম পাঠিয়ে থাকলে, সেটাও নবান্নে পাঠানো হয়েছে। নবান্ন থেকে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ এ ছাড়া, ‘আমপান’ ঘূর্ণিঝড়ের জন্য শ্রমিকদের ফেরানোর প্রক্রিয়া কিছু শ্লথ হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

নেপালবাবু জানান, ওড়িশার ওই এলাকার বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেটি ওড়িশা সীমানা পর্যন্ত শ্রমিকদের পৌঁছে দেবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা থেকে পুরুলিয়ায় নিয়ে আসার জন্য অন্য বাসের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন