শিশুর মিত্র হয়ে পুরস্কৃত আলিগ্রাম, সাদিনগর আর ভবানন্দ হাই

জেলা শিক্ষা দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুদের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার নিরিখে ওই পুরস্কারের জন্য প্রতি বছর জেলার ৪টি প্রাথমিক এবং ৩টি হাইস্কুলের নাম রাজ্যস্তরে পাঠানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নানুর ও মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

শিশুর উপযোগী পরিবেশ গড়ে শিশুমিত্র পুরস্কার পেতে চলেছে নানুরের আলিগ্রাম, সাদিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কেদারপুর ভবানন্দ হাইস্কুল। তাই পড়ুয়া থেকে শিক্ষক, সব মহলে বইছে খুশির হাওয়া।

Advertisement

জেলা শিক্ষা দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুদের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার নিরিখে ওই পুরস্কারের জন্য প্রতি বছর জেলার ৪টি প্রাথমিক এবং ৩টি হাইস্কুলের নাম রাজ্যস্তরে পাঠানো হয়। রাজ্যস্তরের পরিদর্শনের পরে ২টি প্রাথমিক এবং একটি হাইস্কুলকে ওই পুরস্কার দেওয়া হয়। সেই মতো এ বার সিউড়ির কেদারপুর ভবানন্দ হাইস্কুল এবং নানুরের ওই দুটি স্কুল নির্বাচিত হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর কলকাতার রবীন্দ্রসদনে স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

নানুর দক্ষিণ চক্রের আওতাধীন ১৯৮৪ সালে স্থাপিত আলিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৮ সালে নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার এবং একই বছর চক্র সেরা শিশু সংসদ পুরস্কার পেয়েছে। কচিকাঁচাদের মনোগ্রাহী পরিবেশের জন্য ওই স্কুলে বিভিন্ন সময়ে গড়ে তোলা হয়েছে ট্রেনবাড়ি, পদ্মফুল-শেওলা, শামুক-গুগলি বিভিন্ন ধরণের মাছ চাষের জন্য চৌবাচ্চা সহ বিভিন্ন উপকরণ। এ জন্য চলতি বছর ওই স্কুল শিশুমিত্র পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। অভিভাবক দেবব্রত ঘোষ, নোটন মেটেরা জানান, স্কুল শিশুমিত্র পুরস্কার পাচ্ছে শুনে খুব খুশি হয়েছি। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বদেশ চট্টোপাধ্যায় জানান, পুরস্কার আরও দায়িত্ব সচেতন করে তুলবে।

Advertisement

খুশির হাওয়া বইছে একই চক্রের সাদিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও। ১৯৪৯ সালে স্থাপিত ওই স্কুল ২০১৭ সালে নির্মল বিদ্যালয় হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। পড়ুয়াদের মনোরঞ্জন তথা সামগ্রিক মানোন্নয়নের জন্য ওই স্কুলেও গড়া হয়েছে চিল্ডেন পার্ক, মাছ এবং ফুলচাষের চৌবাচ্চা, জল ধরো জল ভরো প্রকল্প, রঙিন মাছের অ্যাকোয়ারিয়াম, পড়ুয়াদের পরিচালিত শিক্ষা সামগ্রীর দোকান, পরিবেশ বান্ধব দেওয়াল চিত্র, কিচেন গার্ডেন প্রভৃতি। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী নেহেরুন্নেষা খাতুন, ইনসান শেখরা জানান, শিক্ষক মশাইদের কাছে পুরস্কার পাওয়ার খবর শুনে খুব খুশি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিমেষ মণ্ডল এবং সহকারী শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ দাস জানান, সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের সামিল করেই স্কুলের উন্নয়ন ঘটেছে।

নানুর দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভেন্দু চৌধুরীর কথায়, ‘‘এ বার আমাদের চক্রেরই দুটি প্রাথমিক স্কুল শিশুমিত্র পুরস্কার পাচ্ছে বলে আমরাও খুব খুশি। আমাদের পক্ষ থেকেও স্কুল কর্তৃপক্ষকে সংবর্ধনা জানানো হবে।’’

শিশুমিত্র পুরস্কার পাচ্ছে কেদারপুর ভবানন্দ হাইস্কুলও। মহম্মদবাজারের আঙারগড়িয়া মোড়ে অবস্থিত এই হাইস্কুল গত কয়েক বছরে বিভিন্ন বিষয়ে নজর কেড়েছে। বছর দুয়েক আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজপাঠের অনবদ্য ছবি দেওয়ালে এঁকে সাজানো হয়েছে বিদ্যালয়। গত বছর বসানো হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের আবক্ষ মূর্তি। বাহারি গাছের শোভা আলাদা মাত্রা দিচ্ছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণকে। বিভিন্ন ফুলের গাছ ও সাজানো বাগান প্রাঙ্গণ জুড়ে। প্রবেশ দ্বারের বাম দিকে ভেষজ উদ্যান। সেখানে বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদের পরিচিতি ঘটাতে লাগানো হয়েছে ভেষজ উদ্ভিদের নাম লেখা পোস্টার। নজরদারিতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। নতুন ভবনের কাছে করা হয়েছে কিচেন গার্ডেন। সেখানেই ফলছে বেগুন, টমেটো, বরবটি, পালং, পেঁপে প্রভৃতি। বৃষ্টির জল ধরে রাখতে করা হয়েছে রেন ওয়াটার হারভেস্টিং। আছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্মার্ট ক্লাসরুম। প্রোজেক্টরের সাহায্যে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তৈরি হয়েছে ইন্ডোর স্টেডিয়াম। মেয়েদের জন্য রয়েছে কন্যাশ্রী ক্লাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন