দেখুড়িয়া

জগদ্ধাত্রীতে মিলন মেলা

গ্রামের আঠারো হাতের কালীমূর্তির ইতিহাস জানা আছে এলাকার মানুষের। কিন্তু তারই মন্দির চত্বরে কে কবে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেছিল, তা আজও রহস্য এলাকার মানুষের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

গ্রামের আঠারো হাতের কালীমূর্তির ইতিহাস জানা আছে এলাকার মানুষের। কিন্তু তারই মন্দির চত্বরে কে কবে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেছিল, তা আজও রহস্য এলাকার মানুষের কাছে। তবে, বাসিন্দাদের বিশ্বাস, এ পুজোর বয়স প্রায় তিনশো বছরেরও পুরনো। ফি বছরের মতো এ বারও জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেতেছে রামপুরহাটের দেখুড়িয়া গ্রাম।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁচ বছর আগেও বাঁশ দিয়ে টিনের অস্থায়ী ছাউনির নীচে জগদ্ধাত্রী র আরাধনায় মগ্ন ছিলেন গ্রামবাসী। বর্তমানে সরকারি টাকায় গড়ে ওঠা পাকা দালানের সাংস্কৃতিক মঞ্চে গ্রামের প্রাচীন এই পুজোর ঠাঁই হয়েছে। সেই পুজোর আনন্দে এখন দেখুড়িয়ার আশপাশের আট-দশটি গ্রামের বাসিন্দাও শরিক হন। নবমীর সন্ধ্যায় খিচুড়ির সঙ্গে দেবীর কাছে নিবেদিত পাঁঠার মাংস (মানসিক বলিদান), বাঁধাকপির তরকারি, চাটনি সহযোগে একসঙ্গে পাঁচ হাজার লোকের পঙ্‌ক্তি ভোজনে মিলনমেলা বসে যায় দেখুড়িয়া গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দা অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ মুখোপাধ্যায়রা বলছেন, ‘‘গ্রামের যুব প্রজন্মের উৎসাহে বছর কুড়ি থেকে জগদ্ধাত্রী পুজোর জৌলুস এমন বেড়েছে। এ ছাড়াও তারাপীঠ মন্দিরের বহু সেবাইত এই পুজোয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।’’

গ্রামের এই পুজোর বিশেষত্ব হল, দেবীর ডাকের সাজ। জগদ্ধাত্রী এখানে সিংহবাহিনীর উপরে বিরাজ করেন। সেই সিংহবাহিনীর পদতলে আবার একটি হাতি শুয়ে থাকে। এক দিনেই সপ্তমী, সন্ধিপুজো এবং নবমী তিথিতে দেবীকে ছাগশিশু বলি দেওয়া হয়। নবমী তিথিতে সূর্য ওঠার আগেই ভোরবেলায় গ্রামের মহিলা, পুরুষেরা ঢাকের বাদ্যির তালে তালে পা মিলিয়ে গ্রাম সংলগ্ন দ্বারকা নদ থেকে ঘট ভরে দেবীর আবাহন পর্ব সেরে ফেলেন। তার পরেই শুরু হয় পূজার্চনা। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে সেই পুজো। পরের দিন দশমী তিথির সন্ধ্যায় দেবীকে গ্রাম প্রদক্ষিণ করিয়ে নদীতে (জল বেশি থাকলে) অথবা গ্রামের বড়পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়।

Advertisement

উৎসবের দিনগুলোয় মণ্ডপ এলাকায় সুদৃশ্য আলো বসে। কালীপুজোয় বসা গ্রামীণ মেলা জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত থেকে যায়। মেলার ক’টা দিন বড়পুকুরে বসা স্পিড বোটে চড়ে মেলার পাঁপড় খেতে খেতে উৎসবেকর আমেজ নেন গ্রামের মানুষ। একজোট হয় গোটা এলাকা। গ্রামের বাসিন্দা রতন ভট্টাচার্য, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমেশ্বর ভট্টাচার্যরা বলছেন, ‘‘আমাদের গ্রামের পুজোয় সকলেই স্বাগত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন