লাভপুরে তৃণমূল নেতা খুনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই আভাস পেল পুলিশ। বালির ঘাটের দখলকে কেন্দ্র করেই ওই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত্রি ৮টা নাগাদ গ্রাম লাগোয়া চায়ের দোকানের সামনে বোমার ঘায়ে মৃত্যু হয় তৃণমূলের লাভপুর ব্লক কমিটির সদস্য স্থানীয় সাওগ্রামের বাসিন্দা লখরিদ সেখ। আহত হন তাঁর এক ভাইপো সিমরান সেখও। তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দুটি মোটর বাইকে ৪ জন দুষ্কৃতী তাঁদের উপরে বোমা ছুড়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ।
ওই খুনের পরেই ধন্দে পড়ে পুলিশ। যদিও তৃণমূলের লাভপুর ব্লক সভাপতি তরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সিপিএম পায়ের নীচে মাটি খুঁজে পাচ্ছে না। লখরিদ আমাদের ভালো সংগঠক ছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতেই সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু দলের একাংশের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য হয়নি ওই তত্ত্ব। এলাকায় বিরোধী দলের কোনও অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোটা লাভপুর ব্লকে একটি আসনেও মনোনয়ন জমা করতে পারেনি বিরোধীরা। তাই রাজনৈতিক হামলার তত্ত্ব ছাপিয়ে আভাস মিলেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের। বালির ঘাটের দখল নিয়েই দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বেরই জের বলে মনে করছে অনেকে। লখরিদ এলাকার বিধায়ক মনিরুলের ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ছিলেন।
ঘটনা হল, একসময় মনিরুলের মতো ফঃবঃ করতেন। পরে মনিরুলের সঙ্গেই যোগ দেন তৃণমূলে। পরবর্তী কালে ওই গ্রামেরই কংগ্রেসের এক সক্রিয় কর্মীও যোগ দেন তৃণমূলে। লাগোয়া ময়ূরাক্ষী নদীতে একটি বেআইনি বালির ঘাট চালাত তাঁর দলবল। মাস ছয়েক আগে তাঁদের হঠিয়ে ওই ঘাটের দখল নেয় লখরিদের অনুগামীরা। এই নিয়ে দু’পক্ষের ঠান্ডা লড়াই চলছিল। সোমবার রাতে তারই জের বলে মনে করছে পুলিশ। বালির ঘাট নিয়ে ওই এলাকায় খুনোখুনির ঘটনা বহুবার ঘটেছে।
২০১০ সালেই মনিরুল ইসলাম এবং তার অনুগামীদের বিরুদ্ধেই সালিশি সভার নামে বাড়িতে ডেকে সিপিএম সমর্থক তিন ভাইকে খুনের অভিযোগ উঠে। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। মনিরুল ইসলাম অবশ্য ফোন ধরেননি, এসএমএসের জবাব দেননি। তবে স্থানীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পল্টু কোঁড়া বলেন, ‘‘আমাদের কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। মিথ্যা বদনাম করা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানায়, পরিবারের তরফে অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে খুনের মামলা দায়ের করে দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে।